রাত কাটতো অন্ধকার গোয়ালে, সন্ধ্যায় ফুচকা বিক্রি, যশস্বী জসওয়ালের গল্প চোখে জল এনে দেবে

যশস্বী জসওয়ালের হৃদয়স্পর্শী গল্প শুনে আপনিও কাঁদবেন

Yashasvi Jaiswal: ২০২৩ আইপিএলে প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ খেলোয়াড়দের মধ্যে সবার প্রথমে আসে যশস্বী জসওয়ালের নাম। এদিন কেকেআরের বোলারদের বেধড়ক পিটিয়ে ১৩ বলে ৫০ করে আইপিএলে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি করার রেকর্ড গড়েন। তিনি ৪৭ বলে ৯৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে রাজস্থানকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। এর কিছুদিন আগেই মুম্বাইয়ের বিরুদ্ধে ১২৪ রানের একটি দুরন্ত ইনিংস খেলেছিলেন।

এখন সকলেই যশস্বীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ এবং তাকে ভারতীয় দলের ভবিষ্যৎ তারকা বলা হচ্ছে। তবে এই ২১ বছর বয়সী তরুণ খেলোয়াড়ের সাফল্যের পিছনে রয়েছে এক করুন কাহিনী। অল্প বয়সেই যশস্বীকে কঠোর সংগ্রামের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। উত্তরপ্রদেশের জৌনপুর থেকে ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মুম্বাইয়ে পাড়ি দেন। সেখানে এক আত্মীয়র বাড়িতে গাদাগাদি করে কিছুদিন আশ্রয় পেয়েছিলেন। 

যশস্বীর কথায়, “ওই আত্মীয় একদিন হঠাৎই আমাকে বাড়ি থেকে বের দিয়েছিল। মুম্বই কাউকে চিনতাম না। খুব অসহায় লাগছিল। তখন একটা কাজ করলাম, নিজের জিনিসপত্র নিয়ে আজাদ ময়দানে চলে গেলাম। তারা আমাকে বলেন, আগে একটা ম্যাচ খেলে দেখা। ভালো পারফর্ম করতে পারলে তাঁবুতে থাকতে পারবি।” 

যশস্বী জসওয়াল এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তার জীবন সহজ ছিল না। গরুর সাথে অন্ধকারে রাত কাটানো ছিল ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। এমনকী শৌচাগারও ছিল না। নিজের জামাকাপড় নিজেই কাচতে হত। দিন ওভাবেই কেটে যাচ্ছিল, কিন্তু ভীষণ কষ্টের ছিল দিনগুলি। নিজের কষ্টের কথাগুলো কাউকে বলতে পারতাম না।

কারণ মালিরা আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করত। কখনও কখনও মারধরও করত। পেটের দায়ে একটা সময় ফুচকা বিক্রি করতে শুরু করি। ধীরে ধীরে ওই জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু ভগবানের কাছে সবসময় প্রার্থনা করতাম যাতে এত কষ্টের জীবন থেকে বেরিয়ে আসতে পারি।”।  

তিনি আরো জানান, খেলা শেষে সন্ধ্যায় ফুচকা বিক্রি করতেন। অবশেষে জায়গা হয় আজাদ ক্রিকেট ময়দানের তাঁবুতে। তবে জ্বলা সিং নামে একজন কোচের সাথে যশস্বীর দেখা না হলে এই সংগ্রামের পথ আরও দীর্ঘ হতে পারতো। ২০১৩ সালে ওই কোচ তার খেলা দেখে মুগ্ধ হয় এবং তাকে তার বাড়িতে থাকার সুযোগ করে দেয়। 

এরপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি যশস্বী জসওয়ালকে। ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন এবং প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজের পুরস্কার জিতেছিলেন। বিজয় হাজারে ট্রফিতে মুম্বাইয়ের হয়ে ডাবল সেঞ্চুরিও রয়েছে তার। এদিকে আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালস তাকে ৪ কোটি টাকার বিনিময়ে কিনে নেয়।