মহিষাসুরের অত্যাচারে স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোক সকলেই অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। তাকে বধ করার জন্য দেবতারা দেবী দুর্গাকে তৈরি করেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেই অসুরকে পূজা করা হয় কেন? কি বলা হয়েছে পুরাণে এবার জেনে নেওয়া যাক।
পুরাণ অনুযায়ী বলা হয়েছে, মহিষাসুর কেবল মর্ত্যলোকে নয় স্বর্গলোকের উপরেও অত্যাচার শুরু করেছিলেন। তিনি ব্রহ্মার দেওয়া বরে এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন যে স্বর্গলোকে আক্রমণ করার উপক্রম করেন। তার কাছে সমস্ত দেবতারা একে একে পরাজিত হন, কারণ ব্রহ্মা তাকে যে বর দিয়েছিলেন তাতে বলা হয়েছিল কোনও পুরুষ মহিষাসুরকে বধ করতে পারবেন না।
এরপর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করেন মহিষাসুর। পরাজিত দেবতারা আশ্রয় নেন ব্রহ্মার কাছে। ব্রহ্মা তখন মহাদেব ও বিষ্ণুর শরণাপন্ন হয়ে মহিষাসুরকে বধ করার উপায় বের করেন। এরপর ব্রহ্মা বিষ্ণু শিব ও ইন্দ্র এবং আরো অন্যান্য দেবতাদের দেহ থেকে নির্গত তেজ থেকে তৈরি করেন এক পরমা সুন্দরী নারী। যার দশটি হাতে ১০ প্রকারের অস্ত্র প্রদান করেন তারা।
এরপর মহিষাসুর এই মহামায়ার রূপে আকর্ষিত হয়ে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দেন আর এই প্রস্তাবকে অবহেলা করলে দেবীর সাথে মহিষাসুরের যুদ্ধ শুরু। এবং শেষ পর্যন্ত মহিষাসুর নিহত হন। তারপর মহিষাসুর তিনবার জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আর দেবী তিনবারই তাকে বিনাশ করেন। প্রথমে অষ্টাদশভুজা উগ্রচণ্ডা রূপে, দ্বিতীয়বার ভদ্রকালী এবং তৃতীয়বার দশভুজা দেবী দুর্গা রূপে মহিষাসুরকে বধ করে।
‘কালিকাপুরাণ’ অনুযায়ী একদিন রাত্রে মহিষাসুর ভদ্রকালী মূর্তি স্বপ্ন দেখলে তারপর থেকে তিনি শুরু করেন ভদ্রকালীর আরাধনা। এই আরাধনায় দেবী সন্তুষ্ট হলে তাকে বর দিতে চান। তখন মহিষাসুর দেবীর কাছ থেকে বর চেয়ে বলেন তাঁকেও যেন সকলে পুজো করে। এরপর থেকে মহিষাসুর উগ্রচণ্ডা, ভদ্রকালী আর দুর্গা — এই তিন মূর্তিতে পদলগ্ন হয়ে সেই থেকে পূজিত হয়ে আসছেন।