ওড়িশায় অবস্থিত কোনারক মন্দির, যা একটি বহু প্রাচীন সূর্য মন্দির, তা সত্ত্বেও কেন সেখানে সূর্য পূজা করা হয় না এই প্রশ্নটি সবার মনে আসা স্বাভাবিক। কোনারক মন্দিরটি ১২৫০ সালে রাজা নরসিংহদেব নির্মাণ করেছিলেন। মন্দিরটি ওড়িশা ও দ্রাবিড় সংমিশ্রণে ধূসর বেলে পাথর দিয়ে বিশাল রথের আকারে তৈরি করা হয়।
এই মন্দিরটির নির্মাণের সময় নরসিংহদেব একটি অদ্ভুত নিয়ম বানিয়েছিলেন যে এই মন্দিরে প্রতিদিন ১২০০ শ্রমিক কাজ করবে আর ১২ বছরে এই মন্দিরটির নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে। যদি ১২০০ জন শ্রমিকের মধ্যে কোনও একজন শ্রমিক কমবেশি হয়, তাহলে সবার প্রাণদণ্ড হবে।
এই শর্তে মন্দিরের কাজ শুরু হয়। এর কিছুদিন পর একজন শ্রমিকের স্ত্রী গর্ভবতী হয়, তবুও সেই শ্রমিকের কাজ ছেড়ে যাওয়া ছাড়া সম্ভব ছিল না। এরপর ওই শ্রমিকের স্ত্রী একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেও তিনি মন্দিরের কাজ ছেড়ে যাননি। আর ওই পুত্রটির নাম রাখা হয় ধর্ম দাস।
শিশুটি তার মায়ের কাছে তার পিতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তার মা তার পিতা সম্পর্কে সবই জানাই। এরপর ওই শিশুটি বড় হয়ে তার পিতার কাছে যায়, তখনও ওই মন্দির নির্মাণের কাজ সাত দিন বাকি ছিল। তবুও ওই শ্রমিকটি নির্মাণ কাজ ছাড়তে পারলেন না। মন্দিরের মঙ্গল ঘট তখন স্থাপিত হয়নি।
আর এই জন্য পিতার কষ্ট দেখে ধর্মদাস মঙ্গল ঘট নির্মাণের জন্য কাজে লেগে পড়েন এবং সে সফল হন কিন্তু এতে রাজার নির্দেশ উলঙ্গন হয়। তাই ১২০০ শ্রমিকের প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে ধর্মদাস ওই মন্দিরে চূড়া থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেন। আর এই কারণেই এই মন্দিরে আজও পূজা করা হয় না।
সূর্যদেবের মন্দির হওয়া সত্ত্বেও এই মন্দিরে কোনও বিগ্রহ নেই। কথিত আছে নাকি? রাত নামলে এই মন্দিরের চারপাশ থেকে বিকট আর্তনাদ শোনা যায়।