ভারতীয় রেল: ট্রেনের নীল এবং লাল রঙের বগির অর্থ কী, কোনটি বেশি সুরক্ষিত

Indian Railway: বর্তমানে ভারতীয় রেল বিশ্বের চতুর্থ এবং এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্ক। বিভিন্ন গ্রাম ও শহরের মধ্যে ছড়িয়ে থাকা রেল লাইনের উপর দিয়ে চলা ট্রেন মানুষের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে থাকবেন যে ট্রেনের বগিগুলি বিভিন্ন রঙের হয়। তবে বেশিরভাগ মানুষই জানেই না এই রঙের অর্থ কি! 

ভারতীয় রেলওয়েকে দেশের ‘লাইফ লাইন’ বলা হয়। কারণ বেশিরভাগ মানুষ তার গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে ট্রেনে ভ্রমণ করেন। তবে বেশিরভাগ আপনি নীল অথবা লাল রঙা বগির ট্রেন দেখে থাকবেন। কখনো ভেবে দেখেছেন এই রঙের পার্থক্য কী? এতে আলাদা কোন সুবিধা রয়েছে? এই দুই বগির মধ্যে কোনটি বেশি নিরাপদ? এবার বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।  

প্রথমে নীল কোচের কথা বলি। একে বলা হয় অবিচ্ছেদ্য বা ইন্ট্রিগাল কোচ। অর্থাৎ ICF, এটি ভারতে নির্মিত প্রাচীনতম কোচগুলির মধ্যে একটি। ইন্ট্রিগাল কোচ ফ্যাক্টরিতে লোহা দিয়ে তৈরি হয় কোচ, যার কারণে এর ওজন বেশি। এর মধ্যে রয়েছে জেনারেল, এসি, স্লিপার, ডেমু এবং মেমু কোচ। এর সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি (ICF) চেন্নাইতে অবস্থিত এবং এটি ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

লাল রঙের কোচকে বলা হয় এলএইচবি ইন্টিগ্রাল কোচ (Linke Hofmann Busch)। এই কোচগুলি জার্মানিতে তৈরি করা হয়, যা ২০০০ সালে জার্মানি থেকে ভারতে আনা হয়েছিল। সেই থেকে এই লাল রঙের কোচ তৈরি হচ্ছে পাঞ্জাবের কাপুরথালায়। এই কোচগুলি আসলে অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি এবং আইসিএফের তুলনায় অনেক হালকা। একই সময়ে, যদি আমরা এর গতির কথা বলি, তবে এর সর্বোচ্চ গতি প্রতি ঘন্টায় ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। অর্থাৎ উচ্চগতির ট্রেনের জন্য এই কোচগুলো ব্যবহার করা হয়।

এবার জেনে নেওয়া যাক লাল ও নীল রঙের বগির মধ্যে কোনটি বেশি নিরাপদ। দুর্ঘটনার সময়, ICF অর্থাৎ লাল রঙের বগিগুলি একে অপরের উপরে উঠে যায়। ডুয়াল বাফার সিস্টেমের কারণে এমনটা ঘটে। অন্যদিকে নীল রঙের কোচগুলি একে অপরের উপরে উঠে যায় না, কারণ তাদের একটি সেন্টার বাফার কলিং সিস্টেম রয়েছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হয়।