আজ অব্দি উদ্বোধন হয়নি, ভারতের এই বিশ্ববিখ্যাত সেতুর গল্প কী জানেন

Howrah Bridge: ভারত ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক সেতু রয়েছে, তবে এই সেতুগুলোর মধ্যে অনেকগুলিই এমন যে কোন বিশেষ কারণের জন্য বিশ্ব বিখ্যাত হয়েছে। কিছু সেতুকে আমাদের দেশের গর্বও বলা হয়। এমন একটি সেতু ভারতেও রয়েছে। শুধু দেশই নয়, সারা বিশ্বে এই সেতুর সুনাম রয়েছে।

তবে আশ্চর্যের বিষয় হল বিশ্ববিখ্যাত হলেও সেতুটি আজ পর্যন্ত উদ্বোধন করা হয়নি। এই সেতু সম্পর্কিত এমন অনেক মজার তথ্য রয়েছে যা এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে তুলে ধরা হলো। আসলে আমরা কলকাতার হাওড়া ব্রিজের কথা বলছি, এই ব্রিজটি কলকাতার পরিচয় বহন করে।

Image

হাওড়া ব্রিজ তৈরি হওয়ার প্রায় ৮০ বছর হয়ে গেছে, কিন্তু আজও তা আগের মতই দাঁড়িয়ে আছে। এমনকি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪২ সালের ডিসেম্বরে একটি জাপানি বোমা এই সেতু থেকে অল্প কিছু দূরে পড়েছিল, কিন্তু তারপরও এর এতটুকু ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

উনিশ শতকের শেষ দশকের ব্রিটিশ ভারত সরকার কলকাতা ও হাওড়ার মধ্যে প্রবাহিত হুগলি নদীর উপর একটি ভাসমান সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করে। সেই সময়কালে হুগলি নদীতে প্রতিদিন অনেক জাহাজ আসা-যাওয়া করতো এবং পীলার যুক্ত সেতু এই জাহাজগুলি চলাচলে বাধা সৃষ্টি করতে পারে, তাই ১৮৭১ সালে হাওড়া সেতু আইন পাস করা হয়।

Image

এরপর হাওড়া সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৩৬ সালে এবং শেষ হয় ১৯৪২ সালে। এরপর ১৯৪৩ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি সাধারণ মানুষ এটি ব্যবহার শুরু করে। সেই সময় এটি ছিল বিশ্বের তৃতীয় দীর্ঘতম সেতু। ১৯৬৫ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের নাম অনুসারে এর নামকরণ হয় রবীন্দ্র সেতু।

মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গেছে, হাওড়া ব্রিজ তৈরিতে ২৬,৫০০ টন ইস্পাত ব্যবহার করা হয়েছিল, যার মধ্যে ২৩,৫০০ টন ইস্পাত টাটা স্টিল সরবরাহ করে। সেতুটির বিশেষত্ব হলো এটি নদীর দুই ধারে নির্মিত ২৮০ ফুট দুটি পিলারের উপর টিকে আছে। এছাড়া সেতুটিকে সাপোর্ট করার জন্য নদীর মাঝে কোথাও পিলার নেই।

Image

হাওড়া ব্রিজের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এর স্টিল নির্মাণের প্লেটগুলিকে সংযুক্ত করতে নাট-বোল্ট ব্যবহার করা হয়নি, ধাতুর তৈরি পেরেক ব্যবহার করা হয়েছিল। ২০১১ সালের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে যে, তামাক ও থুতু ফেলার কারণে সেতুর পায়ের পুরুত্ব কমেছে। এরপর সেতু নিরাপত্তার জন্য এর স্টিলের পা গুলোকে নিচে থেকে ফাইবার গ্লাস দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।