গোটা বিশ্ব রহস্যে পরিপূর্ণ। তেমনি আমাদের ভারতবর্ষেও এমন কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে রাতের অন্ধকারেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলে ওঠে। এর কারণটা জানলে আপনি অবাক হতে পারেন। প্রথমেই জানিয়ে রাখি এই আলো কোন কৃত্রিম বা চাঁদের আলো নয়। প্রকৃতি নিজে থেকেই এক অপরূপ রূপে ধরা দেয় ভারতের এই জায়গা গুলিতে। এবার বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক!
জুহু সৈকত, মহারাষ্ট্র: মুম্বাইয়ের বিখ্যাত জুহু সৈকতে রহস্যময় নীল আলো আজও দেখা যায়। আসলে এর জলে থাকা কিছু অতি সূক্ষ্ম সামুদ্রিক শৈবালের কারণে এটি ঘটে। এগুলোকে বলা হয় মাইক্রোস্কোপিক সামুদ্রিক উদ্ভিদ। বিজ্ঞানীরা একে ফাইটোপ্লাংটন বলে। সমুদ্রে অবস্থিত এই সূক্ষ্ম উদ্ভিদগুলো প্রোটিনের সংমিশ্রণে এক বিশেষ ধরনের নীল আলো উৎপন্ন করে, যখন সৈকতের ঢেউ ওঠে তখন এই আলো ছড়িয়ে পড়ে এবং সৈকতকে পুরো নীল দেখায়।
মাটটু সৈকত, কর্ণাটক: এই সৈকত পিকনিক, হাঁটাহাঁটি এবং সূর্যাস্তের পর অপূর্ব দৃশ্যের জন্য বিখ্যাত হয়ে রয়েছে। এখানে মজার বিষয় হলো এখানকার জল রাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলে ওঠে। সামুদ্রিক জীব বিজ্ঞানীদের মতে, এই সৈকতের জলে নকটিলুকা সিন্টিলান্স নামক একটি অনুজীবের কারণে এমনটা ঘটে থাকে।
বেতালবাটিম সৈকত, গোয়া: ভারতের ক্ষুদ্রতম রাজ্য গোয়া সমুদ্র সৈকতের জন্য বিখ্যাত। এখানে সারা বছর প্রচুর বিদেশী পর্যটকের দেখা মেলে। তবে দক্ষিণ গোয়ায় অবস্থিত বেতালবাটিম সৈকতে রাত নামলেই প্রকৃতির এক অপূর্ব খেলা দেখা যায়। এখানকার জলে উপস্থিত জৈব-লুমিনেসেন্সের কারণে অন্ধকারে জ্বলজ্বল করে।
পুরুষবাদী বন, মহারাষ্ট্র: মহারাষ্ট্রের এই আদিবাসী গ্রাম গ্রীষ্মকালে প্রচুর পর্যটকদের আকর্ষণ করে। লক্ষ লক্ষ জোনাকি তাদের প্রজনন ঋতুতে সংগীতের আকর্ষণ করার জন্য গোধূলির সময় প্রাকৃতিকভাবে আলোর সৃষ্টি করে। মে এবং জুন মাসে জোনাকিরা তাদের সঙ্গীদের আকৃষ্ট করার জন্য গাছে বসে এবং মিট মিট করে চলতে থাকে। যা দেখে মনে হয় গাছপালা এবং আশেপাশের জিনিসগুলো আলোকিত হয়ে উঠেছে।
পশ্চিম জয়ন্তিয়া পাহাড়, মেঘালয়: ভারতের ‘ইলেকট্রিক মাশরুম’ গবেষকরা পশ্চিম জয়ন্তিয়া পাহাড় জেলায় পৌঁছালেই টর্চ বন্ধ করতে বলেন। কারণ এখানকার গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মাশরুমগুলি নিজেরাই আলো নিঃসরণ করছে। পরীক্ষায় জানা গেছে, এই ইলেকট্রিক মাশরুমগুলি রোরিডোমাইসিস প্রজাতির এক নতুন প্রজাতি।