সৌরভ গাঙ্গুলীর অধিনায়কত্বে ভারতীয় দলে এমন কিছু তরুণ খেলোয়াড়ের উদয় হয়েছিল যারা পরবর্তীকালে সবচেয়ে বড় ম্যাচ উইনার খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত হন। তবে খারাপ পারফরম্যান্সের পরও তারা সৌরভ গাঙ্গুলীর সমর্থন পেয়েছিলেন, কিন্তু ধোনির অধিনায়কত্বে সেইভাবে তারা সমর্থন পাননি। এই প্রতিবেদনের সেই ৫ খেলোয়াড়ের কথা বলা হয়েছে:
১) বীরেন্দ্র শেহবাগ:
বীরেন্দ্র শেহবাগ নিজেও বিশ্বাস করেন যে তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার যেমনই হোক না কেনো, সবটাই সৌরভ গাঙ্গুলীর অবদান। দাদা নিজের জায়গা ছেড়ে শেহবাগকে ওপেন করার সুযোগ করে দেন এবং এর প্রতিদানে তিনি অনেক ম্যাচ জিতিয়েছিলেন। তবে ধোনির অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর সেই সমর্থন কমে যায়। মাঝেমধ্যেই ধোনি ও শেহবাগের মন-কষাকষি লেগেই থাকত। ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের পর এই বিধ্বংসী ওপেনারের কদর অনেকটাই কমে যায় এবং দল থেকে তিনি বাদও পড়েছিলেন।
২) যুবরাজ সিং:
২০০০ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মাধ্যমে যুবরাজ সিং তার ক্যারিয়ার শুরু করেন। তিনি যে একজন বড় মাপের খেলোয়াড় হতে চলেছেন, সৌরভ গাঙ্গুলী তার এই প্রতিভাকে আগেই চিনতে পেরেছিলেন। তার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে অধিনায়কের প্রচন্ড সমর্থন পান। কিন্তু সেইভাবে ধোনির সমর্থন পাননি তিনি। সম্প্রতি যুবরাজকে বলতেও দেখা গেছে, সৌরভ যেভাবে তাকে সমর্থন করেছিলেন, সেভাবে ধোনি বা কোহলি কেউ করেননি। ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের পর যুবরাজের ক্যারিয়ার ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যায়।
৩) হরভজন সিং:
ভারতীয় অফস্পিনার হরভজন সিংও ধোনির অধিনায়কত্বে তেমন সমর্থন পাননি। কিন্তু সৌরভ গাঙ্গুলীর নেতৃত্বে তিনি একজন দুর্দান্ত খেলোয়াড় ছিলেন এবং অনেক ম্যাচ জিতিয়েছেন। ১৯৯৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল তার। তিনি ভারতের হয়ে ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ দলের সদস্য ছিলেন। এরপর ভারতীয় দলে রবীচন্দ্রন অশ্বিনের উদয় হলে হরভজন নিয়মিতভাবে খেলে যেতে পারেননি। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন এই ভারতীয় ‘কিংবদন্তি’ স্পিনার।
৪) ইরফান পাঠান:
খুবই অল্প বয়সে ইরফান পাঠান সৌরভ গাঙ্গুলীর অধিনায়কত্বে অভিষেক করেছিলেন। তিনি একজন দুর্দান্ত সুইং বোলিংয়ে জন্য পরিচিত হন। এর ঠিক দুই তিন বছরের মধ্যেই বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার হয়ে ওঠেন। করাচি টেস্টে তার দুর্দান্ত সুইং বোলিংয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওভারেই হ্যাটট্রিক নিয়েছিলেন। এরপর মহেন্দ্র সিং ধোনি অধিনায়ক হলে তিনি একবার দলের ভেতরে ও দলের বাইরে যেতে থাকেন। এভাবে তিনি তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারে আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর ঘোষণা করে দেন।
৫) জাহির খান:
ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে জাহির খান একজন দুর্দান্ত ফাস্ট বোলার হিসেবে পরিচিত। তার অসাধারণ বোলিংয়ের কারণে ভারতীয় দলকে অনেক ম্যাচ জিতিয়েছেন। জাহির খান তার বলের গতির মিশ্রণ এবং দুর্দান্ত ইয়র্কারের জন্য পরিচিত ছিলেন। এছাড়া মাঝেমধ্যে বাউন্স বল দিয়ে বিশ্বের তাবড় তাবড় ব্যাটসম্যানদের সমস্যায় ফেলতেন। ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ে তিনি যথেষ্ট অবদান রেখেছিলেন। তবে সৌরভ গাঙ্গুলী যেভাবে তাকে সমর্থন করেছিলেন, ধোনির কাছ থেকে সেই ধরনের সমর্থন পাননি। এইভাবে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থেকে অবসর ঘোষণা করেন।