ভারতের যে দুই নারী সবচেয়ে বড় পদ অর্জন করেছেন, রাষ্ট্রপতি হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন

ভারতবর্ষে নারীরা সকল ক্ষেত্রে পুরুষদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলেছে। রাজনীতি, শিক্ষা, সেনাবাহিনী, খেলাধুলায় সব বিভাগেই পুরুষদের টেক্কা দিতে শুরু করেছে নারীরা। ভারতীয় রাজনীতিতে অনেক নারী আছেন যারা তাদের ছাপ রেখে গেছেন। সর্বোচ্চ পদের কথা বলে শুধুমাত্র প্রতিভা দেবী সিং পাতিল এবং দ্রৌপদী মুর্মু রাষ্ট্রপতি পদে পৌঁছেছেন। জানিয়ে রাখি, রাষ্ট্রপতিকে দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক বলা হয়।

২০১২ সালে প্রতিভা দেবী দেশের ১২তম রাষ্ট্রপতি হন। এর আগে তিনি রাজস্থানের রাজ্যপালও হয়েছিলেন। প্রতিভা দেবীর ২৭ বছর বয়সে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন। ১৯৩৪ সালে মহারাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেন এবং স্নাতক শেষ হওয়ার পর প্রতিভা দেবী মুম্বাইয়ের আইন কলেজে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন।

Image

প্রতিভা দেবী ছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেত্রী। তিনি বিধানসভা আসন থেকে তার প্রথম নির্বাচনে জয়লাভ করেন। এরপর কংগ্রেসের টিকিটের টানা চারবার বিধায়ক নির্বাচিত হন। তিনি ৭০-৮০ দশকে মহারাষ্ট্র সরকারের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। এরপর থেকে রাজ্যের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী হন। রাজ্যসভার ডেপুটি স্পিকার হিসেবেও দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এছাড়া অনেক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। 

প্রতিভা দেবী তার জীবন নারীদের জন্য উৎসর্গ করেন এবং তার এই অসাধারণ কাজের জন্য মেক্সিকোর সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মানেও ভূষিত হয়েছেন। প্রতিভা দেবী দেশের প্রথম মহিলা রাষ্ট্রপতি যিনি সুখোই যুদ্ধবিমান উড়িয়েছিলেন।

সম্প্রতি ভারতের ১৫তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের অন্তর্গত দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি হলেন দেশের প্রথম আদিবাসী এবং মহিলা দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি।। দ্রৌপদী মুর্মু ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার বাসিন্দা। স্বাধীনতার পরে জন্ম নেওয়া তিনি প্রথম রাষ্ট্রপতি। এছাড়া তিনি ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালও ছিলেন।

দ্রৌপদীর শৈশব কেটেছে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে এবং তিনি তার কঠোর পরিশ্রমের কারণেই কখনোই হাল ছাড়েননি। এমন একটা সময় এসেছিল যখন স্বামী ও দুই ছেলের মৃত্যুর পর তিনি একেবারে ভেঙে পড়েছিলেন। এরপর সংসার চালাতে তিনি শিক্ষকের চাকরি নেন এবং পরে সেচ বিভাগের চাকরি পান। এরপর শুরু হয় তার রাজনৈতিক জীবন।

দ্রৌপদী মুর্মু ১৯৯৭ সালে প্রথমবারের মতো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২০০০ সালে বিজেপির টিকেটে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রথমবার বিধানসভায় পৌঁছান। এরপর তিনি মৎস্য ও পশু পালন দপ্তরের প্রতি মন্ত্রী হয়েছিলেন। ২০১৫ সালে দ্রৌপদীকে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল করা হয়েছিল। তিনি ২০২১ সাল পর্যন্ত গভর্নর ছিলেন। ২০০৭ সালে ওড়িশা বিধানসভায় শ্রেষ্ঠ বিধায়ক হিসেবে দ্রৌপদী মুর্মুকে নীলকান্ত পুরস্কার প্রদান করা হয়।