২০০৫ সালে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের প্রবর্তন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একটি নতুন বিপ্লব আনে। এই সীমিত ওভারের খেলাটি খুব শীঘ্রই দর্শকদের মনে জায়গা করে নেয়। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে আইসিসি ২০ ওভারের ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের আয়োজন করে।
আজকের প্রতিবেদনে, এমন পাঁচ অধিনায়কের কথা বলা হয়েছে, যারা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছেন। অবশ্য এই তালিকায় একজন দু’বার এই কৃতিত্ব অর্জন করেন। এবার বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক:-
১) মহেন্দ্র সিং ধোনি: ভারত
২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের সিনিয়ররা খেলতে না রাজি না হওয়ায় নতুন অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছিল মহেন্দ্র সিং ধোনিকে। প্রাথমিক গ্রুপে পর্বে ভারতীয় দল দুর্দান্ত পারফর্ম করে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে পরাজিত করে ফাইনালে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল।
ফাইনালে গৌতম গম্ভীরের ৭৫ রানের দৌলতে ভারতীয় দল ১৫৭ রান তোলে। জবাবে পাকিস্তানি দল শেষ পর্যন্ত টানটান উত্তেজনায় মাত্র ৫ রানের জন্য পরাজিত হয়। ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন ইরফান পাঠান আর অন্যদিকে টুর্নামেন্টের সেরা হয়েছিলেন শাহিদ আফ্রিদি।
২) ইউনুস খান: পাকিস্তান
প্রথম সংস্করণের বিশ্বকাপ পরাজয়ের পর ২০০৯ সালে শক্তিশালী রূপে ফিরে আসে ইউনিস খানের পাকিস্তানি দল। সেমিফাইনালে তারা দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা দলের মুখোমুখি হয়েছিল। শ্রীলঙ্কা টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ১৩৮ রান তোলে। জবাবে পাকিস্তানি দল শাহিদ আফ্রিদির বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ৮ বল বাকি থাকতেই প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয়।
৩) পল কলিংউড: ইংল্যান্ড
২০১০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পল কলিংউড এর নেতৃত্বে ইংল্যান্ড দল ফাইনালে ওঠে। সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে তারা ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৪৭ রান খাড়া করে। জবাবে ইংল্যান্ড ১৭ ওভারেই প্রয়োজনীয় রান তুলে তারা প্রথমবারের মতো কোনো আইসিসি ট্রফি জয়লাভ করে।
৪) ড্যারেন স্যামি: ওয়েস্ট ইন্ডিজ
২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে দীর্ঘ সময় পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের জন্য গৌরব ফিরিয়ে এনেছিলেন অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি। এই টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অস্ট্রেলিয়াকে ৭৪ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত করে। এরপর তারা ফাইনালে শ্রীলঙ্কা দলের মুখোমুখি হয়েছিল।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মারলন স্যামুয়েলসের (৭৮) গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসের জেরে ১৩৭ রানে সম্মানজনক স্কোরে নিয়ে যায়। জবাবে শ্রীলঙ্কান দলটি মাত্র ১০১ রানে বিধ্বস্ত হয় ও ৩৬ রানে জয়লাভ করে ড্যারেন স্যামির দল।
৫) লাসিথ মালিঙ্গা: শ্রীলঙ্কা
আইসিসি টুর্নামেন্টের একাধিক ফাইনালে হেরে অবশেষে শ্রীলঙ্কা দল ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জয়ের স্বাদ পায়। সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাজিত করে তারা ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল। ভারত প্রথমে ব্যাট করে বিরাট কোহলির (৭৭) দৌলতে ১৩০ রান তোলে। জবাবে কুমার সাঙ্গাকারার অর্ধশত রানটি জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়। ম্যাচের ১৩ বল থাকতেই চ্যাম্পিয়ন হয় লাসিথ মালিঙ্গার দল।
৬) ড্যারেন স্যামি: ওয়েস্ট ইন্ডিজ
২০১৬সালে আবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ড্যারেন সামির নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয়। সেমিফাইনালে ভারতীয় দলকে হারিয়ে তারা ফাইনালে ইংল্যান্ড এর মুখোমুখি হয়েছিল। ফাইনালে ইংল্যান্ড দল প্রথমে ব্যাট করে ১৫৫ রান তোলে। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের জয়ের জন্য শেষ ওভারে ১৯ রান বাকি ছিল। তবে কার্লোস ব্রাথওয়েট শেষ ওভারে পরপর চারটি ছক্কা হাঁকিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে তার দেশকে চ্যাম্পিয়ন করেন।