বলা হয় ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা, তবে ক্রিকেট বিশ্বে এমন কতগুলি খেলোয়াড়ের পরিচয় পাওয়া গেছে যারা নানানভাবে এই খেলাকে কালিমালিপ্ত করেছেন। এর পাশাপাশি তাদের অভদ্র আচরণের পিছনে লুকিয়ে ছিল চরম স্বার্থপরতা। এই প্রতিবেদনে ক্রিকেট বিশ্বের তেমনি ৫ জন ‘স্বার্থপর’ ক্রিকেটারের সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।
□ জিওফ্রে বয়কট:
ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার জিওফ্রে বয়কট বহুবার তার স্বার্থপরতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি ব্যাটিং করার সময় মাঝেমধ্যে এতটাই মন্থর গতিতে খেলতেন যে তার দলের ক্রিকেটাররাই ক্ষুব্ধ হতেন। কখনো কখনো সেঞ্চুরি মুখে এসে তিনি রান করার কোনো চেষ্টা করতেন না। তার স্লো ইনিংসের জন্য অনেক জেতা ম্যাচ হাতছাড়া হয়েছে কিংবা ড্র হয়েছে। জানা যায়, একবার তিনি ২৬৪ রানের ইনিংস খেলার পরেও দল থেকে বাদ গিয়েছিলেন।
□ স্যার রিচার্ড হ্যাডলি:
নিউজিল্যান্ডের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার স্যার রিচার্ড হ্যাডলির সাথে নাকি তার দলের অন্যান্য সদস্যদের সাথে সম্পর্ক খুব একটা ভালো ছিল না। সব সময় তিনি অন্যদের ছোট করতেন নিজেকে বড় প্রমাণ করার জন্য। যেকোনও প্রসঙ্গ উঠলেই তার তুলনা দিতেন। এমনকি কখনই ম্যাচের সেরা হওয়া পুরস্কারের মূল্য তার সতীর্থদের সাথে ভাগাভাগি করতেন না। প্রসঙ্গত, নিউজিল্যান্ডের হয়ে তিনি সর্বোচ্চ টেস্ট ক্রিকেটে ৪৩১টি উইকেট নিয়েছেন।
□ শিবনারায়ন চন্দ্রপল:
ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রাক্তন ক্রিকেটার শিবনারায়ণ তার সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন। তিনি তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের প্রচুর সুনাম অর্জন করেছেন কিন্তু আবার তার চরিত্রেও স্বার্থপরতার দাগ লাগে। এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান যখন টেল এন্ডারদের সাথে ব্যাটিং করতেন নিজে কখনো স্ট্রাইক নেওয়ার চেষ্টা করতেন না। কঠিন কঠিন বোলারদের মুখে ফেলে দিয়েছেন তাদের। তার সতীর্থদের মুখ থেকে শোনা গেছে, তিনি অপরাজিত থাকবেন বলেই এই কাজটি করতেন।
□ সুনীল গাভাস্কার:
নিঃসন্দেহে সুনীল গাভাস্কার টেস্ট ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হলেও তিনিও স্বার্থপরতার পরিচয় দিয়েছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম ১০,০০০ রান সংগ্রহকারী ব্যাটসম্যান মাঝেমধ্যেই খুব মন্থর গতিতে ব্যাটিং করতেন যে কারনে ভারতীয় দলকে বিপাকে পড়তে হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৭৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৩৫ রানের লক্ষ্যমাত্রা থাকা সত্ত্বেও তিনি ১৭৪ বলে মাত্র ৩৬ রানে অপরাজিত থাকেন। তার এই ইনিংসে ছিল মাত্র একটি বাউন্ডারি। যা নিয়ে এখনও সমালোচনা হয়।
□ শাহিদ আফ্রিদি:
শাহিদ আফ্রিদি পাকিস্থানের একজন দুর্ধর্ষ অলরাউন্ডার হওয়ার পাশাপাশি তার স্বার্থ নিয়ে চলার একটি অভ্যাস করেছিলেন। বেশ কয়েকবার দলগত ঝামেলায় জড়িয়ে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন আবার ফিরেও এসেছেন এর কারণ তার আত্মসম্মানবোধ প্রবল ছিল। এই কারণে অনেক পাকিস্তানি খেলোয়াড় বা সমর্থকরা তাকে স্বার্থপর ক্রিকেটার বলতেন। প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের হয়ে তিনি সর্বোচ্চ ৩৯৩টি একদিনের ম্যাচ খেলার রেকর্ড করেছেন।