গদর : বাস্তবের তারা সিং কে চেনেন, যার কাহিনী শুনলে চোখে জল আসবে

যে সৈনিকের বেদনাদায়ক গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছিল সানি দেওলের ‘গদর’

Gadar’s Real Story : ২০০১ সালে সানি দেওল (Sunny Deol) অভিনীত ‘গদর এক প্রেম কথা’ বক্স অফিসে সুপারহিট হয়েছিল। এর ২২ বছর পর মুক্তি পেয়েছে ‘গদর ২’, যা বক্স অফিসে বিরাট সাফল্য পেয়েছে। ছবিতে তারা সিংয়ের ভূমিকায় সানি দেওল এবং সাকিনার ভূমিকায় আমিশা পাটেলের রসায়ন মানুষ খুব পছন্দ করেছিল।

কিন্তু আপনি কি জানেন এই ছবিটি একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ‘গদর’ ছবিটি ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান বিভাজনের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। এতে সানি দেওলকে একজন সর্দারের ভূমিকায় আর আমিশা পাটেলকে একজন মুসলিম মেয়ের ভূমিকায় দেখা গেছে।

কিন্তু এই ছবির গল্প এক সৈনিকের জীবনের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়, যার করুন প্রেমের কাহিনী ভারত থেকে পাকিস্তানের মানুষকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এই সৈনিকের নাম বুটা সিং (Buta Singh), যার ভূমিকায় অভিনয় করেন সানি দেওল। বুটা সিং ছিলেন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সৈনিক।

দেশভাগের পর যখন হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা চলছিল, তখন বুটা সিং একজন মুসলিম মেয়ের জীবন বাঁচিয়েছিলেন। মেয়েটির নাম জয়নাব। এরপর তারা একে অপরের প্রেমে পড়েন এবং বিয়ে করেন। তাদের একটি কন্যা সন্তানও হয়। এবার যেহেতু জয়নাব পাকিস্তানের নাগরিক ছিলেন তাই বাধ্যতামূলকভাবে চলে যেতে হয়।

কিন্তু বুটা সিংকে পাকিস্তানে প্রবেশ করতে দেওয়া যায়নি। জয়নাবকে ছাড়া তার বেঁচে থাকাও কঠিন ছিল। তিনি অবৈধভাবে পাকিস্তানে প্রবেশ করেন এবং তার স্ত্রী জয়নাবের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। এদিকে পরিবারের চাপে জয়নাব তার বিয়ে ভেঙে এক নিকট আত্মীয়কে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়।

অন্যদিকে বুটা সিং অবৈধভাবে পাকিস্তানে পাড়ি দেওয়ায় ধরা পড়েন এবং তাকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, জয়নাব তার স্ত্রী এবং তাদের একটি মেয়েও রয়েছে। কিন্তু জয়নাব পারিবারিক চাপে বুটা সিং ও তার কন্যার সাথে যেতে অস্বীকার করেছিলেন।

Image

জয়নাবের থেকে এভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার যন্ত্রণা সইতে পারেননি বুটা সিং। সে স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিল, তার ছোট্ট মেয়েটিও তার কোলে বসে কাঁদছিল। তখনই বুটা সিং সামনে থেকে আসা ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ দেন। পরবর্তীতে বুটা সিংকে ‘শহীদ-ই-মহব্বত’-এর মর্যাদা দেওয়া হয়। কথিত আছে, জয়নাব এখনো বেঁচে আছেন।