সাপের বিষ ঠিক যেন তরল হীরের মত। মূল্যের কারণে সাপের বিষকে তরল হীরে বলা হয়। কারণ ১ গ্রাম সোনার বর্তমান বাজার দর ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা, আর সেখানে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের দেশীয় সাপের প্রক্রিয়াজাত করা ১ গ্রাম ভাইপার রাসেলের বিষের মূল্য প্রায় ২ লক্ষ টাকা। এছাড়া কালাচ সাপের বিষের মূল্য ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা। এমনকি সামুদ্রিক সাপের বিষের মূল্য ৪ থেকে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা।
ভারতবর্ষে কত প্রজাতির বিষধর সাপ রয়েছে যাদের বিষ অত্যন্ত মূল্যবান। তবে সাপের বিষ এত কেন দামি? এর প্রধান দুটি কারণ হচ্ছে মানুষের জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরিতে এটি ব্যবহৃত হয়। সাপে কাটা রোগীদের জন্য সাপের বিষ দিয়ে অ্যান্টিভেনম তৈরি হয়। এছাড়া হার্টের অসুখ, ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সাপের বিষ দিয়ে তৈরি হয় অনেক দামি ওষুধ।
বিশ্বে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ সাপের দংশনে অসুস্থ হয়, এরমধ্যে দেড় লক্ষ মারা যায়। সাপে কাটা রোগীর জন্য অ্যান্টিভেনম জীবনদায়ী ওষুধ। একটি এন্টিভেনম এর মূল্য প্রায় ১৫০০ ডলার। যদিও প্রতিটি দেশের সরকার ভর্তুকি নিয়ে স্বল্প দামে সরবরাহ করে থাকে। বিভিন্ন দেশ অ্যান্টিভেনম আবিষ্কার করতে পারে না, তাই তারা বাইরে থেকে আমদানি করে। তাই চড়া দামে সাপের বিষ দিয়ে তৈরি অ্যান্টিভেনম আমদানি করতে হয়।
দ্বিতীয়তঃ কারণ হচ্ছে মাদকাসক্তদের কাছে সাপের বিশেষ চাহিদা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। যে সকল মানুষদের আসক্তি চরম সাধারণ মাদকে কোন নেশা হয় না, তারা কড়া নেশার জন্য সাপের বিষ ব্যবহার করেন। এছাড়াও আজকাল উন্নত মাদকে ব্যবহৃত হচ্ছে সাপের বিষ।
এছাড়া কিছু কিছু অঞ্চলে মানুষ রয়েছে যারা তাদের দীর্ঘদিন যৌবন ধরে রাখতে নির্দিষ্ট পরিমাণে নিয়মিত সাপের বিষ গ্রহণ করে থাকেন। সাপের বিষের ব্যবসা অত্যন্ত লাভজনক। দেশে সাপের বিষ উৎপাদনে বৈধ নিয়ম না থাকায়, অবৈধভাবে সাপের বিষ উৎপাদন করে কোটি কোটি টাকায় বিদেশে পাচার করা হচ্ছে।