পরশুরামের দৈত্য কুঠারটি আজও এখানে রয়েছে, হাজার হাজার বছর পরেও মরচে ধরেনি

Parashuram: পরশুরাম হলেন বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার। কঠোর তপস্যা করে তিনি শিবের কাছ থেকে পরশু লাভ করেন এবং যুদ্ধবিদ্যা শেখেন। বৈশাখ মাসের শুক্লার তিথিতে পরশুরামের জন্ম, সেই কারণে ওই দিন বিষ্ণু মন্দিরে ‘পরশুরাম জয়ন্তী’ পালিত হয়। 

কথিত আছে, ৭ জন চিরঞ্জীবীদের মধ্যে পরশুরাম একজন। বিশ্বাস করা হয়, তিনি আজও জীবিত আছেন। এক পাহাড়ের উপরে অবস্থিত একটি মন্দিরে ভগবান পরশুরামের সমাধি রয়েছে, যেখানে তিনি নিজেই সমাধিত হয়েছিলেন। 

ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচি থেকে প্রায় ১৫০ কিমি দূরে গুমলা জেলায় টাঙ্গিনাথ ধাম অবস্থিত। এই মন্দিরে ভগবান পরশুরামের দৈত্য কুঠারটি আজও রয়েছে। হাজার হাজার বছর পরেও এই কুঠাটি খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকলেও এতটুকু মরচে ধরেনি। 

একবার কিছু উপজাতির মানুষ কুঠারটি উপড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তারা ব্যর্থ হয় এবং এর ওপরের একটি অংশ কেটে নিয়ে গিয়েছিল। এই ঘটনার পর ওই উপজাতির মানুষরা একে একে মারা যেতে শুরু করে। এরপর তারা ওই অঞ্চল ছেড়ে ভয়ে পালিয়ে যায়। 

টাঙ্গিনাথ ধামে ভগবান পরশুরামের কুঠারটি রাখার পিছনে একটি ঘটনা রয়েছে। কথিত আছে, ক্রেতা যুগে জনকপুরে মা সীতার স্বয়ংবরসভা চলাকালীন যখন ভগবান রাম ধনুক ভেঙেছিলেন। তখন পরশুরাম প্রচন্ড ক্রোধে ভগবান রাম ও তার ভাই লক্ষণকে চিনতে না পেরে উগ্র ভাষায় কথা বলেন।

কিন্তু পরে যখন পরশুরাম বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি রাম ভগবান বিষ্ণুর অবতার তখন তিনি লজ্জায় তার প্রায়শ্চিত্ত করতে একটি ঘন পর্বতের মধ্যে চলে যান। একই সাথে নিজের কুঠারটি মাটিতে পুঁতে দিয়ে তপস্যা করা শুরু করেন। যে জায়গাটি আজ টাঙ্গিনাথ ধাম নামে পরিচিত। পরশুরাম এর দৈত্য কুঠারটি ছাড়া তার পদচিহ্নগুলিও সেখানে রয়েছে।

১৯৮৯ সালে এখানে একটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের দল খনন কার্য চালিয়েছিল। সেখানে তারা হীরের মুকুটসহ সোনা, রূপ ও গয়না অনেক মূল্যবান জিনিস উদ্ধার করে। তবে তারা খননটি হঠাৎ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এর পিছনে কোন কারণ ছিল তা আজও রহস্য হয়ে আছে।