Lohargarh Fort: আমরা প্রায় সকলেই জানি ১৬০৮ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজরা ভারত আক্রমন করে এবং তারপর থেকেই সমগ্র ভারতের একের পর এক স্থান দখল করে, কিন্ত আমাদের দেশে এমন স্থান আছে যেখানে হাজার প্রচেষ্টার পরেও ইংরেজ থেকে শুরু করে কেউই দখল করতে পারেনি। এমনই একটি স্থান হল রাজস্থানের ভরতপুরে রয়েছে, যেটি লোহারগড় দূর্গ নামে পরিচিত।
এই লোহারগড় (Lohargarh) দূর্গটি এমন একটি জায়গা যা এখনও পর্যন্ত কেউ জয় করতে পারেনি। এমনকী ইংরেজরাও এটিকে জয় করতে পারেনি। লোকমুখে প্রচলিত আছে, এই দূর্গে কামানের গোলা পর্যন্ত কাজ করেনা। ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারি এই দূর্গটি প্রায় ২৮৫ বছরের, যা ১৭৩৩ সালে জাট শাসক মহারাজা সুরজ মল তৈরি করেন।
যখন এই দূর্গটি তৈরি হয় তবে কামান বারুদের প্রচলন অন্যান্য সময়ের থেকে একটু বেশিই ছিল। শত্রুপক্ষরা কামান বারুদ দিয়ে বড় বড় দূর্গ ও ভবনগুলিকে দখল করে সেগুলিকে নিজেদের কুক্ষিগত করে নিত। এই কারনেই এই দূর্গ নির্মাণকালে একটি বিশেষ পরীক্ষা করা হয়, যার ফলে হাজার গোলাগুলিও তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারেনি।
এই দূর্গ নির্মাণের আগে পাথরের একটি উঁচু পাঁচিল তৈরি করা হয়। কামানের গোলা কোনোমতেই এর ওপর প্রভাব ফেলেতে পারেনি, তাই এই সকল দেওয়ালের পাশে শত শত ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট মাটির দেওয়াল তৈরি করা হয়েছে এবং তার নিচে একটি গভীর, প্রশস্ত পাখিরা তৈরি করা হয়েছে ও জলে ভরাট করা হয়। তাই এই অবস্থায়
শত্রুরা জল পেরিয়ে গেলেও সমতল প্রাচীর বেয়ে ওঠা তাদের জন্য খুবই কঠিন ছিল।
কামান থেকে ছোড়া গোলাগুলো মর্টার দিয়ে তৈরি দেয়ালে আঘাত করে কিছু করতে পারত না। এতে দুর্গের কোনও ক্ষতি হয়নি। কথিত আছে, এই দুর্গ দখল করতে ইংরেজরা ১৩ বার আক্রমণ করার চেষ্টা করেছিল। ইংরেজ সেনাবাহিনী এখানে শত শত কামান বর্ষণ করেও লোহারগড় দুর্গের ওপর কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। ব্রিটিশরা সর্বত্র দখল করলেও এই প্রাচীন দুর্ভেদ্য দুর্গ ভেদ করতে ব্যর্থ হয়েছে।