ভারতের এই সেতুটি সারা বিশ্বে বিখ্যাত কিন্তু ৮০ বছর পরেও এর উদ্বোধন করা হয়নি

৮০ বছর পরেও উদ্বোধন করা হয়নি ভারতের কোন সেতু?

যেকোন সেতু নদীর দুই তীরের মানুষের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কখনো কখনো এই সেতুগুলোকে দেশের গর্ব বলে মনে করা হয়। ভারতে এমনই একটি সেতু রয়েছে যেটি শুধু দেশেই নয়, সারা বিশ্বে বিখ্যাত। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো এই সেতুটির আজ পর্যন্ত উদ্বোধন করা হয়নি।

আসলে এই প্রতিবেদনে হাওড়া ব্রিজের (Howrah Bridge) কথা বলা হয়েছে যা কলকাতা ও হাওড়াকে মিলিত করেছে। আজ থেকে ৮০ বছর আগে এই সেতুটি নির্মিত হয়েছিল। ১৯৪২ সালে ডিসেম্বরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন এই সেতু থেকে কিছুদূরে একটি জাপানি বোমা নিক্ষেপ করা হয়, কিন্তু এই সেতুর কোন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

Image

জানা যায়, ১৮০০ এর দশকের শেষ দিকে ব্রিটিশ সরকার কলকাতা ও হাওড়ার মধ্যে প্রবাহিত হুগলি নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করে। যেহেতু সেসময় হুগলি নদীতে প্রতিদিন অনেক জাহাজ আসা-যাওয়া করত, তাই কোন সেতু নির্মাণ করার নির্দেশ ছিল না। কিন্তু ১৮৭১ সালে স্তম্ভ ছাড়াই সেতু নির্মাণ করার একটি আইন প্রণীত হয়।

Image

এরপর ১৯৩৬ সালে হাওড়া ব্রিজের নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল এবং টানা ৬ বছর পর অর্থাৎ ১৯৪২ সালে এটি শেষ হয়। ১৯৪৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি সাধারণ মানুষের জন্য এই ব্রিজ উন্মুক্ত করা হয়েছিল। তৎকালীন এই ব্রিজটি ছিল বিশ্বের তৃতীয় দীর্ঘতম সেতু।

Image

১৯৬৫ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের নাম অনুসারে এর নামকরণ করা হয় রবীন্দ্র সেতু। সেতু নির্মাণে ২৬,৫০০ টন ইস্পাত ব্যবহার করা হয়েছিল, যার সিংহভাগ ছিল টাটা স্টিল কোম্পানির।

এই সেতুর বিশেষত্ব হলো পুরো সেতুটি দুটি ২৮০ ফুট উঁচু স্তম্ভের উপর নির্মিত যা নদীর উভয় তীরে রয়েছে। এই দুই স্তম্ভের মধ্যে দূরত্ব দেড় হাজার ফুট। এই দুটি স্তম্ভ ছাড়া নদীতে আর কোন স্তম্ভ নেই, যা সেতুটিকে সাপোর্ট দিতে পারে। এমনকি নাট বল্টু ব্যবহার করা হয়নি।

Image

২০১১ সালে একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে মানুষের অসচেতনতা, তামাক ও থুতুর কারণে সেতুটির স্তম্ভ দুটির পুরত্ব হ্রাস পেয়েছে। পরবর্তীকালে ফাইবার গ্লাস দিয়ে স্টিলের স্তম্ভ দুটিকে ঢেকে এটিকে সংরক্ষিত করা হয়েছিল। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা।