পৃথিবীতে এমন অনেক প্রাকৃতিক আশ্চর্য স্থান রয়েছে যেখানে গেলে আপনার মনে হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক জগতে পৌঁছেছি, এমনই এক বিস্ময় আমেরিকায় (America) অবস্থিত ব্রাইস ক্যানিয়ন (Bryce Canyon)। পাহাড়ের মতো পাথরের উচ্চতা দেখলে মনে হয় প্রকৃতি যেন এটিকে খোদাই করেছে। প্রকৃতির এই বিস্ময় দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকরা এখানে আসেন।
কিন্তু জানলে অবাক হবেন যে আমেরিকার মতো ভারতের মধ্যপ্রদেশেও (Madhya Pradesh) এমন কিছু শিলা ও গুহা রয়েছে যেগুলো দেখতে বিদেশ থেকে পর্যটকরা আসেন। এই জায়গাটি ভীমবেটকা (Bhimbetka) নামে পরিচিত। মধ্যপ্রদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যস্থল। ভীমবেটকার গুহাগুলি হুবহু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাইস ক্যানিয়নের মতো।
ভীমবেটকা গুহা মধ্যপ্রদেশের রাইসেন জেলায় অবস্থিত। ভোপাল থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ভীমবেটকা গুহাগুলির দেয়ালে শত শত রক পেইন্টিং (Rock Paintings) তৈরি করা হয়েছে, যা আমাদের পূর্বপুরুষরা ৩০ হাজার বছর আগে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য তৈরি করেছিলেন।
ভীমবেটকা নামটির সাথে মহাভারতের (Mahabharata) ভীমের (Bhima) গল্পও জড়িয়ে। কেউ বলেন, এই গুহায় ভীমের আসা-যাওয়া ছিল। ভীমের বসার জায়গা বা ‘ভীমবৈঠক’ থেকেই নাম হয়েছে ভীমবেটকা। এখান থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা দূরে পাঁচমারির পাণ্ডবগুহা বা পাঁচমারি নামের মধ্যে থাকা পঞ্চপাণ্ডবের ইঙ্গিত সেই গল্পকথাকে মান্যতাও দেয় খানিকটা।
এখানে ৭৬০টি শিলা রয়েছে, যার মধ্যে ৫০০টি পাথরের উপর আঁকা হয়েছে। তবে, পাথরের উপর তৈরি এই চিত্রকর্মটি তখনই দৃশ্যমান হয় যখন সূর্যের রশ্মি সরাসরি পড়ে। ভীমবেটকা দেশের প্রধান শহরগুলির সাথে সড়কপথে সংযুক্ত। তাই ব্যক্তিগত যানবাহনে ভীমবেটকা পৌঁছতে কোনো সমস্যা হবে না।
ভীমবেটকার নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন হল ভোপাল। ভোপাল স্টেশন থেকে ভীমবেটকার দূরত্ব ৩৭ কিমি। রেলস্টেশনের বাইরে থেকে ভীমবেটকা পর্যন্ত আপনি সহজেই ট্যাক্সি বা গাড়ি পাবেন। এছাড়া ভীমবেটকার নিকটতম বিমানবন্দর হল রাজা ভোজ বিমানবন্দর, ভোপাল। এটি ইউনেস্কো দ্বারা বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছে।