ভারতবর্ষে প্রতি রবিবার ছুটি পালন করা হয় কেন, ৯৯% মানুষের অজানা

Sunday: রবিবার মানেই হলো ছুটির আমেজ। সারা সপ্তাহের ধরে এই দিনটা প্রত্যেকেই অপেক্ষা করে, বিশেষ করে যারা ছাত্র বা অফিসে কাজ করেন। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন রবিবারেই কেন ছুটি থাকে। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে এক ইতিহাস। ভারতের ব্রিটিশ শাসন কাল থেকেই রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি চালু হয়। তবে এই দিনটি কিন্তু সহজেই পাওয়া যায়নি। 

ইংরেজদের অধীনে থাকা ভারতীয় কারখানায় শ্রমিকদের সপ্তাহের সাত দিনই কাজ করতে হতো। তারা কোনদিনই ছুটি পেত না। কিন্তু ব্রিটিশ অফিসাররা প্রতি রবিবার গির্জায় যেত। ফলে ঐদিন কেবল তারাই ছুটি পেতেন। কিন্তু ভারতীয় শ্রমিকদের জন্য এমন কোন নিয়ম ছিল না। 

Image
সেইসময় শ্রমিকদের এক নেতা ছিলেন শ্রীনারায়ণ মেঘাজি লোখান্ডে। তিনি মহারাষ্ট্রের ঠনের বাসিন্দা। ইতিহাসে শ্রমিক আন্দোলনের পথিকৃৎ বলা হয় তাকে। লোখান্ডে ব্রিটিশ আধিকারিকদের বলেন, শ্রমিকদের সপ্তাহে অন্তত একদিন ছুটির প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, রবিবার হিন্দু দেবতা ‘খান্ডোবা’র দিন। তাই শ্রমিকদের ঐদিন ছুটি দিতেই হবে।

তবে শ্রমিক নেতা লোখান্ডের এই প্রস্তাবে কোন সাড়া দেয়নি ব্রিটিশ আধিকারিকরা। কিন্তু লোখান্ডে হার মানার পাত্র নয়। এই দাবির আদায়ের জন্য শ্রমিকদের নিয়ে টানা ৭ বছর কঠিন লড়াই চালিয়ে গেছেন। অবশেষে তার কাছে হার মানেন ব্রিটিশ সরকার। ১৮৯০ সালের ১০ই জুন রবিবারকে শ্রমিকদের জন্য সাপ্তাহিক ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। 

Image

উনবিংশ শতাব্দীতে ভারতের বস্ত্র কারখানার উন্নতিতে শ্রীনারায়ণ মেঘাজি লোখান্ডের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। লোখান্ডে ভারতের প্রথম শ্রমিক সংগঠন চালু করেন। তার কারণেই শ্রমিকরা রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি পান। শুধু তাই নয়, কাজের দিনগুলিতে খাওয়ার জন্য আধঘন্টা সময় এবং প্রতি মাসের ১৫ তারিখে মাইনের ব্যবস্থাও করেছিলেন তিনি।

Image

তবে মজার বিষয় হল, ব্রিটিশরা ভারত ছেড়ে কবেই চলে গেছে। এরপর ভারতে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হয়। কিন্তু ব্রিটিশদের থেকে আদায় করে নেওয়া সাপ্তাহিক ছুটিটি অপরিবর্তিত থেকে গেছে। ভারত সরকারও সেই নিয়ম বদলায়নি। আর সেই থেকেই রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবেই চলে আসছে।