কখনও ভেবেছেন সূর্য উধাও হয়ে গেলে আমাদের পৃথিবীর কি হবে

আমাদের সৌরজগতের মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সূর্য। পৃথিবীর সমস্ত শক্তির উৎসই সূর্য। জীব ও উদ্ভিদকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সূর্যের কোনও বিকল্প নেই। সূর্যের কারণেই পৃথিবীতে এখনো প্রাণের অস্তিত্ব টিকে রয়েছে ও আমরা সকল জৈবিক কার্যকলাপ সুস্থ হয়ে পালন করতে পারছি। কিন্তু কখনও ভেবেছেন সূর্য যদি হঠাৎ উধাও হয়ে যায় তাহলে পৃথিবীর কি হবে? 

সূর্য আমাদের আলোর প্রধান উৎস। তবে আলোর গতি এত বেশি হওয়া সত্ত্বেও পৃথিবীতে আলো পৌঁছাতে প্রায় আট মিনিট সময় লেগে যায়। তবে সূর্য যদি হঠাৎ বিলীন হয়ে যায় তা আমাদের চোখে বুঝতে সময় লাগবে ৮ মিনিট। অর্থাৎ ৮ মিনিট পর বুঝতে পারব সূর্য আর নেই। তবে কোন দুর্ঘটনা না ঘটলে শুধু আলোর অভাবে আমাদের তৎক্ষণাৎ কোন সমস্যা হবে না।

Image

এই পরিস্থিতিতে ইলেকট্রিসিটি থাকবে ও এর পাশাপাশি তারা গুলো কিছুটা আলো দেবে। এমনকি বৃহস্পতি গ্রহকেও প্রায় এক ঘণ্টার মতো দেখা যাবে। কিন্তু পৃথিবীতে বিপত্তি ঘটবে ঠিক ৮ মিনিট পর। কারণ সূর্যের আলো ছাড়া সালোকসংশ্লেষ ঘটবে না তাই উদ্ভিদগুলিও খাবার তৈরি করতে না পেরে কয়েকদিনের মধ্যেই মারা যাবে।

তবে এর চেয়েও বড় সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে আমাদের। আমরা জানি সূর্য তাপের প্রধান উৎস। সূর্য উধাও হয়ে যাওয়া ঠিক এক সপ্তাহের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা ০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যাবে। আর এক বছর শেষে পৃথিবীপৃষ্ঠের তাপমাত্রা গিয়ে দাঁড়াবে, মাইনাস ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

Image

এই অবস্থায় পৃথিবীর উপভাগের সমুদ্রের জলগুলো বরফ হয়ে পৃথিবীকে একটি বরফখন্ডের মতো লাগবে। এমনকি সূর্য না থাকলে মহাকর্ষ বলের অভাবে পৃথিবী শূন্যের দিকে সোজা ছুটতে থাকবে। এই সময় কোন কিছুর সাথে সংঘর্ষ না হলে পৃথিবী প্রথম এক বিলিয়ন বছরে পুরো আকাশ গঙ্গা ছায়াপথের দৈর্ঘ্যের সমান দূরত্ব অতিক্রম করে ফেলবে আর অনন্তকাল এই ভাবেই চলবে।

সর্বোপরি সূর্য উধাও হয়ে গেলে, মানবজাতির পাশাপাশি সমস্ত প্রাণীকুলের অস্তিত্ব ধীরে ধীরে ধ্বংস হতে শুরু করবে। পৃথিবী তখন একটি বিশাল বরফের গ্রহের পরিণত হয়ে যাবে। তবুও পৃথিবীর গভীরতম স্থানে অবস্থানরত মাইক্রবের মতো নানাজীব বেঁচে থাকবে।

Image

হয়তো কোন গ্রহের সাথে সংঘর্ষ না হলে মিলিয়ন বছর পর পৃথিবী অন্য কোন নক্ষত্রের কক্ষপথে চলে আসবে আর তখন তাপের কারণে পৃথিবী আবারও গলতে শুরু করবে আর নিজের আদিরূপে ফিরে আসবে। তখন হয়তো সমুদ্রের নিচে থাকা মাইক্রোন থেকে আবার নতুন জীব প্রজাতি তৈরি হবে, যেভাবে পৃথিবীতে সর্বপ্রথম জীব তৈরি হওয়া শুরু হয়েছিল।