নতুন পরিবেশে গিয়ে সকলকে মানিয়ে নিতে যথেষ্ট চাপ এবং উৎকণ্ঠা দুই থাকে সুতরাং বিয়ের আগেই প্রতিটা নারীর জানা উচিত তার শ্বশুরবাড়িতে কোন কোন আইনি অধিকার রয়েছে। এদেশে এখনও হামেশাই শোনা যায় বধূ নির্যাতনের কথা।
২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টে কি রায় দিয়েছিল বাড়ির বউকে পরিবারের সদস্যের মতোই ব্যবহার করতে হবে, পরিবারের অংশ ভাবতে হবে, বাড়ির কাজের লোক নয় এমনকি যেকোনো পরিস্থিতিতে তাকে হুমকি দেওয়া চলবে না। এরপরেও বছরের-পর-বছর বধূ নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন শ্বশুরবাড়ির হেনস্তার ফলে তারা বাধ্য হচ্ছেন আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে।
ভারতীয় সংবিধানে কোন কোন আইনি অধিকার এর কথা বলা হয়েছে তাদের অবশ্যই জানা উচিত:-
১) বাঁচতে দিতে হবে সম্মানের সাথে, পুত্রবধূর উপর কোন রকম মানসিক বা শারীরিক অত্যাচার করা যাবে না, এটি আইনী চোখে একটি অপরাধ। যা ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্ট লংঘন করে।
২) স্বামী ও পরিবার যে ভাবে জীবন যাপন করে ঠিক একই ভাবে অধিকার দিতে হবে স্ত্রীদের। যদি স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে যায় তাহলে স্ত্রী এবং সন্তানের সমস্ত দায়ভার গ্রহণ করতে হবে স্বামীকে। (শিক্ষা, খাওয়া-দাওয়া, থাকার জায়গা, পোশাক-পরিচ্ছদ, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত খরচ ইত্যাদি)
৩) বিয়ের সময় বা বিয়ের আগে স্ত্রীর যে সকল সম্পত্তি থাকে অর্থাৎ “স্ত্রীধন” তা শুধুমাত্র ভারতীয় হিন্দু বধূদের উপর অধিকার থাকে। এরমধ্যে রয়েছে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, গয়না, টাকা পয়সা সব কিছুই। কিন্তু সেই সম্পত্তি যদি জোর করে ছিনিয়ে নেয়া হয় বা বাজেয়াপ্ত করা হয় সেটাও আইনি চোখে অপরাধ।
৪) ডিভোর্সের ক্ষেত্রে নারীদের সম্পূর্ণ অধিকার থাকে যতক্ষণ না তা আইনিভাবে প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে। অর্থাৎ বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার আগে পর্যন্ত তার স্বামী অন্য কোনো নারীর সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেনা।
৫) স্বামী যে বাড়ীতে থাকবেন সেই বাড়িতে তার স্ত্রী থাকা সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে। সে যেমনই বাড়ি হোক পারিবারিক সূত্রে পাওয়া, ভাড়া বাড়ি কিংবা কর্মসূত্রে পাওয়া যেকোনো বাড়ি। আর সেই স্ত্রী যতদিন বাঁচবেন সেই বাড়িতে তার থাকা সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে তিনি মালিক হোন বা না হোন।
৬) মুসলিমদের ক্ষেত্রে ‘তিন তালাক’ ধর্মীয় আচরণের অঙ্গ নয়। এটা সাংবিধানিক নৈতিকতার লঙ্ঘন। এই আইন ভঙ্গ করলে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।