জন্ডিস রোগের লক্ষণগুলি কি কি এবং প্রতিরোধ করার উপায়

জন্ডিস নিজে কোন একটি রোগ নয়, বরং এটি একটি রোগের লক্ষণ বিভিন্ন কারণে এই রোগটি শিশু থেকে বৃদ্ধ মানুষের যে কোনো বয়সেই হতে পারে। সাধারণত লিভারের প্রদাহজনিত রোগকেই জন্ডিস বোঝানো হয়। আমাদের দেশে জন্ডিস এর প্রধান কারণ হেপাটাইটিস ই, এ এবং বি ভাইরাস। এটি প্রধানত জল ও খাদ্যবাহিত আর মূলত রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়।

∆ জন্ডিস এর লক্ষণ:-
এই রোগে প্রধান লক্ষণ হল চোখ ও প্রসাবের রং হলুদ হয়ে যাওয়া। সমস্যা বেশি হলে পুরো শরীর গাঢ় হলুদবর্ণ ধারণ করতে পারে। অনেক সময় পায়খানা সাদা হয়ে যাওয়া, চুলকানি ইত্যাদি উপসর্গও দেখা যায়। এছাড়া শারীরিক দুর্বলতা, ক্ষুধামন্দা, জ্বর, বমি, পেটব্যথা ইত্যাদি তো আছেই। রক্তে বিলিরুবিনের পরিমাণ বেড়ে গেলে চামড়া পাণ্ডুর বা ফ্যাকাশে দেখা যায় বলে জন্ডিসকে আগে পাণ্ডুরোগ বলা হত।

∆ কিভাবে প্রতিরোধ করবেন:-
১) পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, জীবাণুমুক্ত খাবার ও পানীয় গ্রহণ করাই জন্ডিসের আক্রমণ থেকে বাঁচার মূলমন্ত্র। রাস্তাঘাটে জল, ফলের জুস, সরবত ইত্যাদি খাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধান হতে হবে। সময়মত হেপাটাইটিস এ এবং বি’র টিকা নিতে হবে।

২) জন্ডিস হলে রোগীকে পুরোপুরি বিশ্রাম নিতে হবে। যকৃতের প্রতি অতিরিক্ত যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। প্রচুর শর্করাজাতীয় ও ভিটামিন-সিযুক্ত খাবার খেতে হবে। গ্লুকোজ, আখের রস, আনারস ইত্যাদি জন্ডিস রোগীর জন্য উপকারী।

৩) জন্ডিস হলে প্যারাসিটামল, অ্যাসপিরিন বা ঘুমের ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। পরিপাকতন্ত্রে জমে থাকা জীবাণুগুলো যাতে প্রদাহ তৈরি করতে না পারে সে জন্য রোগীকে প্রতিদিন কমপক্ষে একবার হলেও পায়খানা করা নিশ্চিত করতে হবে।

৪) জন্ডিস কোনো রোগ নয় বলে একে মোটেও অবহেলা করা উচিত নয়। জন্ডিসের চিকিৎসা নিয়ে অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। কেউ ঝাড়ফুঁক করে জন্ডিস নামায়, রোগীকে অতিরিক্ত হলুদ দিয়ে রান্না করা খাবার খাওয়ান, কেউ আবার বিভিন্ন গাছের শেকড় খান। এগুলো সম্পুর্ণ ভুল ধারণা। জন্ডিস হলে সরাসরি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।