বাঘ সম্পর্কে এই তথ্যগুলি আপনাকে অবাক করে তুলবে

‘বাঘ বাঁচাও’ এই স্লোগানটি আপনি নিশ্চয় শুনেছেন। কারণ বনের সিংহ রাজার মতো এই প্রজাতির প্রাণীটিও বিলুপ্তির পথে ছিল। পরিসংখ্যানের কথা বললে, প্রতি ২০ লক্ষ মানুষের মধ্যে কেবল ১টি বাঘ রয়েছে। যে কারনে ‘বাঘ বাঁচানোর’ কথা বারবার বলা হয়েছে। এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক এই বিড়াল প্রজাতির প্রাণীটির সম্পর্কে কয়েকটি আশ্চর্যজনক তথ্য:-

১) প্রতি বছর ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস পালিত হয়। এটি ২০১০ সালে উদযাপন শুরু হয়েছিল।

২) বিড়াল প্রজাতির বৃহত্তম প্রাণীটি হল বাঘ। এটি মেরু ভাল্লুক ও বাদামী ভাল্লুকের পরে পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম মাংসপেশী প্রাণী।

৩) বাঘের গড় আয়ু ১০-১৫ বছর হয় তবে চিড়িয়াখানায় তারা ২৫ বছর অবধি বেঁচে থাকতে পারে। বাঘ একসাথে ২-৬টি বাচ্চা প্রসব করে এবং তাদের গর্ভকালীন সময় ১০৫ দিন।

৪) বাঘের পা এত শক্ত যে তারা মৃত্যুর পরেও কিছু সময়ের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। এমনকি এদের জিভ এতটাই ধারালো হয় যে শিকারির দেহে লেহনের ফলে তার মাংস উঠে হাড় পর্যন্ত বেড়িয়ে আসে।

৫) বাঘেদের নয়টি প্রজাতি রয়েছে তবে গত ৮০ বছরে ৩টি প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এই প্রজাতিগুলি হল- বালি টাইগার, জাভা টাইগার ও কাস্পিয়ান টাইগার।

৬) একটি বাঘের ওজন প্রায় ৩০০ কেজি এবং লম্বায় ১৩ ফুট পর্যন্ত হতে পারে।

৭) সাদা বাঘের জন্মের সম্ভাবনা ১০ হাজারের মধ্যে একটি থাকে। সাধারণত বাঘের চোখ হলুদ বর্ণের হয়। কিন্তু সাদা বাঘের চোখের বর্ণ নীল হয়।

৮) মানুষের আঙ্গুলের ছাপের মত বাঘের ডোরা গুলো ইউনিক হয়। প্রতিটা বাঘের স্ট্রাইপ বা ডোরাগুলো অনন্য হয়। অর্থাৎ একটি বাঘের ডোরার সাথে অন্য বাঘের ডোরার কোন মিল নেই।

৯) ২০১৬ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বে কেবলমাত্র ৩,৮৯১টি বাঘ রয়েছে। যার মধ্যে ৭০% ভারতে এবং ৪০৮টি কর্ণাটকে রাজ্যে রয়েছে।

১০) বাঘের স্মৃতি মানুষের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি।

১১) একটি বাঘ ১৮ হার্টজ পর্যন্ত শব্দ উৎপন্ন করতে পারে এবং এর গর্জন ৩ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত শোনা যায়।

১২) বাঘেরা শিকারের সন্ধানের জন্য রাতে অপেক্ষা করতে থাকে কারণ অন্ধকারে তারা মানুষের চেয়ে ছয় গুণ ভাল দেখতে পায়।

১৩) বাঘ প্রতি ঘন্টায় ৬৫ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে। এমনকি একটানা ৬ কিলোমিটার সাঁতারও কাটতে পারে।

১৪) একজন প্রাপ্তবয়স্ক বাঘ একসাথে ৪০ কেজি পর্যন্ত মাংস খেতে পারে। এর পরে এটি চার বা পাঁচ দিনের জন্য অন্য কোনও শিকার করে না।

১৫) যদি আমরা ১৮০০ সাল থেকে ২০০৯ অবধি গণনা করি তবে বাঘের দ্বারা মোট ৩,৭৩,০০০ মানুষ মারা গেছে।

১৬) গোঁফ থেকে লেজ পর্যন্ত বাঘের দেহের প্রতিটি অঙ্গই বাজারে বেচা বা কেনা বেআইনী।

১৭) একটি বাঘের পেছনের পাগুলি তার সামনের পাগুলির চেয়ে লম্বা হয়, এর ফলে তারা অনেক বেশি দূরত্বে লাফ দিতে সক্ষম হয়।

১৮) বাঘ তাদের গন্ধযুক্ত প্রস্রাব ব্যবহার করার পাশাপাশি তাদের এলাকাগুলি চিহ্নিত করার জন্য গাছগুলিতে নখের আঁচড় কেটে রাখে।

১৯) বাঘ খুব ঘন ঘন ক্ষুধার্ত বোধ করে এবং যদি তারা ২-৩ সপ্তাহের জন্য ক্ষুধার্ত হয়, তাহলে মারা যায়, যেখানে একজন মানুষ খাবার ছাড়াই ৩০-৪০ দিন বেঁচে থাকতে পারে।

২০) আপনি জেনে অবাক হবেন যে বাঘ অন্যান্য প্রাণীর কণ্ঠকেও হুবহু নকল করতে পারে। এবং ডাক নকল করে তাদেরকে সে ফাঁদে ফেলে ধরে।

২১) ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকেরা মাথার পিছনের দিকে মুখোশ পরে। জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় মাথার পিছনের দিকটা মানুষের মুখের মতো দেখায় যাতে বাঘ পিছন থেকে আক্রমণ না করে।

২২) যদিও বাঘ মানুষকে শিকার হিসাবে দেখে না, তবে তারা যদি কোনও বিপদ অনুভব করে বা শিকারের জন্য অন্য কোনও প্রাণী না পায় তবে তারা মানুষকে আক্রমণ করে।

২৩) বাঘের লালায় অ্যান্টিসেপ্টিক থাকে। বাঘ তার দেহের ক্ষততে লালা লাগায় যা শুধু পরিষ্কারই করেনা বরং জীবাণুনাশক হয় ও সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।

২৪) পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো প্রাণীদের মধ্যে বাঘ অন্যতম। চীনের বেশ কিছু অঞ্চলে বাঘের পুরোনো জীবাশ্ম পাওয়া গেছে। গবেষকদের মতে, এই জীবাশ্মগুলোর বয়স প্রায় ২০ লাখ বছর।

২৫) ভারত সহ বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় পশু হলো বাঘ।