ক্রিকেটে সবচেয়ে কঠিন কাজ গুলির মধ্যে একটি অধিনায়কত্ব করা। বোলিং করানো থেকে শুরু করে ব্যাটিং অর্ডার, ফিল্ডিং সাজানো প্রতিটি সিদ্ধান্ত অধিনায়ককে নিতে হয়। সম্ভবত এই কারনেই টিম ম্যানেজমেন্ট এর পক্ষ থেকে একজন যোগ্য খেলোয়াড়কে অধিনায়ক হিসেবে বেছে নেওয়া। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন অনেক দুর্দান্ত অধিনায়ক এসেছেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এবার সর্বাধিক ম্যাচে অধিনায়কত্ব করা ১০ জন খেলোয়াড়ের সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:
১০) ইয়ন মরগ্যান: ১৯৬ ম্যাচ
ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান এই তালিকায় দশম স্থানে রয়েছেন। এই আইরিশ ক্রিকেটার ইংল্যান্ডের হয়ে তিন শ্রেণীর ফরম্যাটে মোট ১৯৬টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যেখানে দল ১১৬টি জিতেছে এবং ৬৭টি হেরেছে। তার ম্যাচ জয়ের শতকরা ৫৯.১৮%।
৯) সৌরভ গাঙ্গুলী: ১৯৬ ম্যাচ
ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী এই তালিকায় নবম স্থানে রয়েছেন। তিনি ভারতের হয়ে ১৯৯৯ থেকে ২০০৫ সাল অবধি অধিনায়কত্ব করেছেন। এইসময় সৌরভ গাঙ্গুলী মোট ১৯৬টি ম্যাচে নেতৃত্ব দেন, যেখানে ভারতীয় দল ৯৭টি জয় এবং ৭৯টি পরাজয়ের মুখোমুখি হয়। তার ম্যাচ জয়ের শতকরা ৪৯.৪৮%।
৮) বিরাট কোহলি: ২১৩ ম্যাচ
সম্প্রতি ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই অধিনায়কত্ব ছেড়েছেন বিরাট কোহলি, যিনি এই তালিকায় অষ্টম স্থানে রয়েছেন। যার নেতৃত্বে ভারতীয় দল সর্বশক্তি লাভ করলেও, একটিও আইসিসি ট্রফি জিততে পারেনি। বিরাট কোহলি ভারতের হয়ে মোট ২১৩টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন যেখানে ১৩৫টি জিতেছে ও ৬০টিতে হেরেছে। তার ম্যাচ জয়ের শতকরা ৬৩.৩৮।
৭) মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন: ২২১ ম্যাচ
ফিক্সিংয়ের অভিযোগে ক্যারিয়ার শেষ হয় প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের, যিনি এই তালিকায় সপ্তম স্থানে রয়েছেন। এই দুর্দান্ত ক্রিকেটার আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতেন, দুর্ভাগ্যবশত তার ক্রিকেট জীবনে অন্ধকারের ছায়া নেমে আসে। আজহারউদ্দিন ভারতের হয়ে মোট ২২১টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন যেখানে ১০৪টি জিতেছে ও ৯০টিতে হেরেছে। তার ম্যাচ জয়ের শতকরা ৪৭.০৫।
৬) অর্জুন রানাতুঙ্গা: ২৪৯ ম্যাচ
শ্রীলঙ্কা দলের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক অর্জুন রানাতুঙ্গা এই তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রয়েছেন। তিনি ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত অধিনায়কত্ব করেছেন। তিনি শ্রীলঙ্কার হয়ে মোট ২৪৯টি ম্যাচে নেতৃত্ব দেন যেখানে ১০১টি জয় এবং ১১৪টি পরাজয়ের মুখোমুখি হয়। তার ম্যাচ জয়ের শতকরা ৪০.৫৬।
৫) অ্যালান বর্ডার: ২৭১ ম্যাচ
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক অ্যালান বর্ডার এই তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে প্রায় এক দশক (১৯৮৪-১৯৯৪ সাল) দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। অ্যালান বর্ডার মোট ২৭১টি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেন, যেখানে অস্ট্রেলিয়া দল ১৩৯টি জেতে ও ৮৯টি ম্যাচ হারে। তার ম্যাচ জয়ের শতকরা ৫১.২৯।
৪) গ্রেম স্মিথ: ২৮৬ ম্যাচ
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন অধিনায়ক গ্রেম স্মিথ এই তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছেন। তিনি বিশ্বের একমাত্র অধিনায়ক যিনি ১০০টিরও বেশি টেস্ট ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২০০৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত গ্রেম স্মিথ ২৮৬টি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছেন যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকা ১৬৩টি জিতেছে এবং ৮৯টি হেরেছে। তার ম্যাচ জয়ের শতকরা ৫৬.৯৯।
৩) স্টিফেন ফ্লেমিং: ৩০৩ ম্যাচ
নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক স্টিফেন ফ্লেমিং এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছেন। তিনি ১৯৯৭ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত কিউই দলের অধিনায়ক ছিলেন। এইসময় নিউজিল্যান্ডের হয়ে স্টিফেন ফ্লেমিং ৩০৩টি ম্যাচে নেতৃত্ব দেন যেখানে কিউই দল ১২৮টি জেতে ও ১৩৬টি ম্যাচ হারে। তার ম্যাচ জয়ের শতকরা ৪২.২৪।
২) রিকি পন্টিং: ৩২৪ ম্যাচ
অস্ট্রেলিয়ার দুবারের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক রিকি পন্টিং এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অধিনায়কত্বের বিচারে তিনিই সেরা বলে গণ্য হন। রিকি পন্টিং ২০০২ থেকে ২০১২ সাল অবধি ৩২৪টি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছেন, যেখানে অস্ট্রেলিয়া দল ২২০টি জেতে এবং ৭৭টি ম্যাচে পরাজয়ের মুখোমুখি হয়। তার ম্যাচ জয়ের শতকরা সর্বোচ্চ ৬৭.৯০।
১) মহেন্দ্র সিং ধোনি: ৩৩২ ম্যাচ
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছেন প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। তিনি বিশ্বের একমাত্র অধিনায়ক যার দখলে আইসিসি ৩টি ট্রফি রয়েছে। ২০০৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ধোনি ৩৩২টি ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যেখানে ভারতীয় দল ১৩৫টি জিতেছে ও ৬০টিতে হেরেছে। তার ম্যাচ জয়ের শতকরা ৫৩.৬১।