বিরাট কোহলি তাঁর দলকে দুইবার আইসিসি টুর্নামেন্টের ফাইনালে নিয়ে যাওয়ার খুব কাছাকাছি এসেও দলকে শিরোপা জেতাতে পারেনি। কোহলির নেতৃত্বের দক্ষতা অসাধারণ হলেও তার ভাগ্য কখনও সাথ দেয়নি। ২০১৪ সালে টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব গ্রহণ করার পর কোহলি ২০১৭ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, ২০১৯ বিশ্বকাপ, ২০২১ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চারটি বড় আইসিসি টুর্নামেন্টে ভারতের অধিনায়কত্ব করেছেন। কিন্তু একটিও শিরোপা জিততে পারেননি।
১) দলের সেরা খেলোয়াড়রা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ব্যর্থ:
বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, জাসপ্রিত বুমরাহের মতো ভারতের দলে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা রয়েছেন। তাদের একটি বিশাল ভূমিকা রয়েছে এবং তবে সংকট পরিস্থিতিতে তাদের খারাপ পারফরম্যান্স পুরো দলকে প্রভাবিত করছে।
বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ও ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খুব তাড়াতাড়ি আউট হওয়ায় ভারতীয় দল বড় ধাক্কা খায় এবং প্রতিপক্ষ দল আরও সহজে ম্যাচটি ছিনিয়ে নেয়।
২) নকআউট খেলার চাপ:
বিরাট কোহলির নেতৃত্বে ভারতীয় দলের নকআউট খেলায় চাপ অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। যেভাবে আইপিএলে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের খেলার সময় এই দৃশ্যটি বারবার ফুটে ওঠে। নকআউট পর্বে যেকোনো খেলোয়াড়ের জন্য এটা সহজ নয়, তবে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় আসল দায়িত্ব।
বিরাট কোহলি নেতৃত্বে ভারত হোক বা তার ফ্র্যাঞ্চাইজি দল রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর উভয় শক্তিশালী দল হওয়া সত্ত্বেও নকআউটে তাদের সম্ভাব্যতা অনুযায়ী খেলতে পারেনি।
৩) কিছু খেলোয়াড়ের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল:
একটি বড় টুর্নামেন্ট জিততে হলে পুরো দলের অবদান রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোন একটি খেলোয়াড় বারবার সফল হবে, এমনটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বিরাট কোহলি কয়েকজন মাত্র খেলোয়াড়ের ওপর নির্ভর করেই হয়তো বারবার টুর্নামেন্ট জিততে ব্যর্থ হয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের আইপিএলে বিরাট কোহলি সেঞ্চুরির পর সেঞ্চুরি করে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর দলকে ফাইনালে নিয়ে যান। কিন্তু ফাইনালে কোহলি ব্যর্থ হলে গোটা দল ধাক্কা খায় কিন্তু আর পুনরুদ্ধার করতে পারেনি।
৪) নকআউট পর্বে বিতর্কিত দল নির্বাচন:
নক আউট পর্বের খেলাগুলি জন্য বিরাট কোহলির দল নির্বাচন সবসময়ই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল এবং ফলাফলও তার পক্ষে ছিল না। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ফাস্ট বোলারদের জন্য পিচ অনুকূল থাকা সত্ত্বেও দুজন স্পিনারকে নিয়ে খেলানোর সিদ্ধান্ত নেন কোহলি। এরপর একজন ফাস্ট বোলারের অভাব দেখা যায়। সেই সময় ফাস্ট বোলার মোহাম্মদ সিরাজ দুর্দান্ত ফর্মে থাকলেও ফাইনালের একাদশে বাদ পড়েন।
৫) ব্যাটিং ধ্বস:
ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে ব্যাটিং ধ্বস অব্যাহত থাকলে যে কোন দলে জেতার সম্ভাবনা খুবই কমে যায়। ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল, ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল, ২০২১ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ এর ফাইনাল এবং ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের লীগের প্রথম দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সেই একই ছবি বারবার ধরা পড়েছে। ভারতীয় দলের আরও ভালো ব্যাটিং পারফরম্যান্সের প্রয়োজন ছিল তা প্রতীয়মান হয়।