World’s Second Largest Wall: আমরা সবাই জানি বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাচীরটি চীনে রয়েছে, যার দৈর্ঘ্য ৬৪০০ কিলোমিটার। কিন্তু জানেন কি দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাচীরটি ভারতবর্ষে রয়েছে। এর চমৎকার নির্মাণশৈলী ও দৈর্ঘ্যের কারণে এটিকে ‘গ্রেট অফ ওয়াল ইন্ডিয়া’র মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এই দেওয়াল নির্মাণের সময় জড়িত রয়েছে একটি অত্যন্ত রহস্যময় কাহিনী, যা জানলে আপনিও অবাক হবেন।
এটি রাজস্থানের রাজসমন্দ জেলায় অবস্থিত, যা ‘কুম্ভলগড়ের প্রাচীর’ নামেও পরিচিত। এই প্রাচীরটি ৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই দুর্গকে ‘অজেয়গড়’ও বলা হয়। কারণ এই দুর্গ জয় করা খুবই কঠিন। একবার মুঘল সম্রাট আকবরও এই দুর্গের প্রাচীর ভাঙতে ঘাম ঝরিয়েছিলেন।
কুম্ভলগড় দুর্গ তৈরি করেছিলেন মহারানা কুম্ভ। এটি তৈরি করতে দীর্ঘ ১৫ বছর লাগে। মহান শাসক মহারানা প্রতাপও ১৬ শতকে এই দুর্গে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। কথিত আছে, হলদিঘাটের যুদ্ধের পর মহারানা প্রতাপ দীর্ঘকাল এই দুর্গে অবস্থান করেছিলেন। এমনকি তার শৈশবও কেটেছে এখানে।
এই দুর্গের ভিতরে ৩৬০টিরও বেশি মন্দির রয়েছে, যার মধ্যে ৩০০টি প্রাচীন জৈন মন্দির এবং বাকিগুলি হিন্দু মন্দির। যদিও এখন সেইসব মন্দিরের অনেকগুলোই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দুর্গের ভিতরে আরও একটি দুর্গ রয়েছে যা ‘কাটারগড়’ নামে পরিচিত। কুম্ভলগড় দুর্গ সাতটি বিশাল গেট দ্বারা সুরক্ষিত। এই দুর্গটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১১০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত।
কথিত আছে, ১৪৪৩ সালে যখন মহারানা কুম্ভ দুর্গ নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন তখন অনেক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। এরপর মহারানা এক সাধুকে ডেকে এই সমস্যার কথা জানালেন। তিনি বলেন, এই প্রাচীর নির্মাণের কাজ তখনই শুরু হবে যখন একজন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় আত্মত্যাগ করবে। কিন্তু তখন আরেকজন সাধু নিজেকে উৎসর্গ করতে রাজি হন।
বলা হয়েছিল, তাকে পাহাড়ে হাঁটতে দেওয়া হবে, যখনই সে থামবে সেখানেই তাকে হত্যা করা হবে। জানা যায়, ৩৬ কিমি হাঁটার পর ওই সাধু থামেন। এরপর তাকে বলি দেওয়া হয় আর এভাবে প্রাচীর নির্মাণের কাজও শেষ হয়ে যায়। কুম্ভলগড়কে চারিদিক থেকে ঘিরে রেখেছে প্রাচীরটি, এটি কুম্ভলগড়ের ‘সিটি ওয়াল’ নামেও পরিচিত। রাতের দেওয়ালের চারপাশে মশাল জ্বালানো হয়, যার আলো প্রাচীরকে আলোকিত করে। রাতের এই দৃশ্য দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর পর্যটক এখানে এসে ভিড় করেন।