কথায় আছে না, “জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ” সর্বত্র বিপদ! একেতো করোনাভাইরাসের বিপদের ঝুঁকি আর তার মধ্যেই তছনছ করে দিয়ে গেল “আমফান”। যার প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই বেশি এবং দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে মানুষের জীবন। রাজ্যের কয়েকটি জেলাতে ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়। এর ফলে পানীয় জল, বিদ্যুৎ এবং আরো নানান সুবিধাগুলি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া এই আমফান ঘূর্ণিঝড়টি ছিল ৬৪তম। যার তাণ্ডবে পশ্চিমবঙ্গে ৭৫ জন মানুষের প্রাণ নিয়ে নিয়েছে মাত্র কয়েক ঘন্টাতেই। হাজার হাজার গাছ, ল্যান্ডপোস্ট শুয়ে রয়েছে রাস্তার দুই ধারে। আর এদিকে চাষীদের সমস্ত ফসল ভরা জমি তলিয়ে গেছে। খবর সূত্রে জানা গেছে, এরই মাঝে আসতে চলেছে আর এক মহাপ্রলয় “নিসর্গ” ঘূর্ণিঝড়।
“নিসর্গ” নামটি দেওয়া বাংলাদেশের। গতবছর ফনি ঘূর্ণিঝড়ের নামটিও তাদেরই দেওয়া ছিল। এবারে “আমফান” ঘূর্ণিঝড়টি নাম দিয়েছিল থাইল্যান্ড। ভারতসহ বিশ্বের ১২টি দেশ মিলে এই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে। এখনো পর্যন্ত ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
কেন ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়? জানা গেছে, প্রত্যেকটি ঘূর্ণিঝড়কে আলাদা আলাদা করে চেনার জন্যই নামকরণ করা হয় যাতে মানুষের কাছে খুবই পরিচিত হয়ে ওঠে এবং অন্যকেও সতর্ক করা যায়। এই নামগুলি মানুষের মনে চিরকাল দাগও কেটে যাবে। যেমন – আইলা, বুলবুল, ফনি এবং আমফান।
আমফান এর পরবর্তী ঘূর্ণিঝড় গুলির নাম হবে – নিসর্গ (বাংলাদেশের প্রস্তাবিত), গতি (ভারতের প্রস্তাবিত), নিভার (ইরানের প্রস্তাবিত), বুরেভি (মালদ্বীপের প্রস্তাবিত), তৌকতাই (মায়ানমারের প্রস্তাবিত), ইয়াস (ওমানের প্রস্তাবিত নাম) ইত্যাদি।
এর আগে ফনি ঝড়ের নাম দিয়েছিল বাংলাদেশ, বঙ্গোপসাগরে জন্ম নিয়ে স্থলভূমিতে ব্যাপক তাণ্ডবলীলা চালিয়ে ছিল। ক্ষয়ক্ষতি হয় বহু মানুষের। এর থেকেও মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি চালিয়েছে “আমফান”। যার আক্ষরিক অর্থ “আকাশ”। এই সুন্দর নামটি এখন মানুষের দুর্বিষহ ও চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে উঠেছে।