আজ থেকে ১৫ বছর আগে, ২০০৫ সালে ভারতীয় ক্রিকেটের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলী। যদিও সেই সময় তিনি ননান প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন কিন্তু তার একটি ছোট্ট চিন্তাধারা বদলে দিয়েছিল পুরোপুরি ভারতীয় ক্রিকেট দলকে। তার কিছু মাস আগেই সৌরভের হাত ধরে জাতীয় দলে অভিষেক করেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।
সৌরভ গাঙ্গুলী ক্রিকেটারদের মধ্যে দক্ষতা খুঁজে পেতে খুব বেশি দেরি করতেন না এবং তাঁরই নেতৃত্বে বহু ক্রিকেটার আকাশছোঁয়া সাফল্য পেয়েছেন। ঠিক তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মহেন্দ্র সিং ধোনি। প্রথমদিকে তাকে কয়েকটি ম্যাচে ৭ নং এ ব্যাট করতে পাঠানো হয় এবং তাতে কোন সাফল্য পাননি।
সেই সময় চলছিল পাকিস্তানের সাথে ওয়ানডে সিরিজ। দ্বিতীয় ম্যাচের আগের দিন সৌরভ গাঙ্গুলী হঠাৎ রাঁচির ২৩ বছরের মাহির প্রতিভার দিকে নজর পড়ে এবং তার সাথে দেখা করতে গিয়ে দেখলেন ড্রেসিংরুমের এক কোণে মাথা গুঁজে বসে আছে। তার কাছে গিয়ে বললেন তুমি কি তিন নম্বরে ব্যাট করবে? অবাক হয়ে সে উত্তর দেয় তাহলে তুমি কত নম্বরে ব্যাট করবে? দাদা বললেন আমি চার নম্বরে। মাহি এককথায় রাজি হয়ে যান।
আজকের দিনে, ৫ই এপ্রিল ২০০৫ সালে, দ্বিতীয় ওডিআই ম্যাচে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানি বোলারদের বেধড়ক ঠেঙিয়ে ১২৩ বলে ১৪৮ রানের ইনিংস খেলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। এই ইনিংসের জেরে দলের স্কোরকার্ড গিয়ে ৩৫৬ রানে দাঁড়ায় এবং ওই ম্যাচটি ভারত ৫৮ রানে জয়লাভ করে।
এরপরে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে আর কখনো পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সৌরভ গাঙ্গুলীর এই একটি সিদ্ধান্ত ভারতীয় ক্রিকেটকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছিল। এরপরে মাহি অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়ে ভারতীয় ক্রিকেটকে আরো এক উন্নতির পর্যায়ে নিয়ে যান। তার হাত ধরে আসে আইসিসির সমস্ত ট্রফিগুলি এবং বহু সিরিজ জয়।
এখন বড়াই করে বলা যেতে পারে সেদিন যদি সৌরভ গাঙ্গুলী মাহির মধ্যে দক্ষতা খুঁজে না পেতেন তাহলে ফর্মের অভাবে এবং উপযুক্ত সুযোগ না পেয়ে জাতীয় দল থেকে কোথাও যেন হারিয়ে যেতেন। সুতরাং সৌরভ গাঙ্গুলীর সামান্য এই চিন্তাধারা বদলে দিয়েছিলো ভারতীয় ক্রিকেটের চেহারাকে।