সিংহ না নরসিংহ? জানেন দেবী দুর্গার আসল বাহন কে

বাঙালির শ্রেষ্ঠ পূজা দুর্গাপূজা। আমরা সকলেই জানি দেবী দুর্গা দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন করেন। প্রতিবছর দেবী দুর্গার আগমনকে কেন্দ্র করে বাঙালির মধ্যে চরম উন্মাদনা থাকে। দেবী দুর্গার আশীর্বাদে সমস্ত ধরনের রোগ, জরা, ব্যাধি এবং অশুভ শক্তি মুক্ত হয় বলে এমনটাই বিশ্বাস করা হয়।

প্রতিবছর আশ্বিন মাসে দেবী দুর্গা সপরিবারে মতে আসেন। এই পাঁচদিন মায়ের উপস্থিতিতে আনন্দে মেতে উঠে গোটা ভারতবর্ষ। এমনকি যেখানে প্রবাসী বাঙালিরা থাকেন সেখানেও দেবী দুর্গা পূজিত হন। এরপর মা তার সকল ভক্তদের আশীর্বাদ করেন ও আবারও শিবের কৈলাসে ফিরে যান।

Image

জানেন কি দেবী দুর্গার বাহন শুধু সিংহ নয় নরসিংহও বটে। তবে কেন এমনটা জানতে হলে পুরাণের পাতা উল্টে দেখতে হবে। বাঙালি হিন্দু সমাজ মূলত দুইটি ধর্মের বিশ্বাস করেন যথা শাক্ত ও বৈষ্ণব। শাক্ত ধর্মাবলম্বীরা শক্তির উপাসনা করেন এবং বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীরা রাধাকৃষ্ণকে আরাধনা করেন। তবে বৈষ্ণবরা অহিংস পূজা অর্চনায় বিশ্বাসী নয়, তাই মা দুর্গা পূজিত হন শাক্ত ধর্মমতে।

বলাবাহুল্য দূর্গা পূজার আয়োজন অত্যন্ত সাপেক্ষে এবং তাই তৎকালীন সমাজে সর্বসাধারণের পক্ষে দেবী দুর্গার পূজা করা সামর্থ্য ছিল না। তাই এই পূজো একমাত্র জমিদার বা ধনী পরিবারগুলোতেই হত। এই বনেদী পরিবার গুলোর মধ্যে কেউ শাক্ত ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন আবার কেউ বৈষ্ণব ধর্মে।

Image

বনেদী পরিবারগুলোতে যেহেতু শাক্তমতে পুজো হয় সেখানে দেবীর বাহন হলেন সিংহ। অপরদিকে বৈষ্ণব মতে যারা মায়ের উপাসনা করেন সেই পরিবারগুলোকে দেবী দুর্গার বাহন ছিল নরসিংহ। এই নরসিংহের মুখের সাদৃশ্য কিছুটা ঘোড়ার সাথে মিল আছে এবং এর গায়ের রং সাদা। তবে সময় যত পেরিয়েছে শাক্ত এবং বৈষ্ণব ধর্মমতের সংমিশ্রণ ঘটেছে।