গ্রীষ্মকালের তীব্র গরমে স্বস্তি এনে দেয় এক পশলা বৃষ্টি কিন্তু এই স্বস্তির বৃষ্টি সাথে আসে ভয়াবহ বজ্রপাত, যা বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এর ফলে অনেক মানুষ ও জীবজন্তু মারা যায়। এই দেশে মার্চ থেকে প্রায় অক্টোবর পর্যন্ত বজ্রপাত হয়ে থাকে। এর মধ্যে এপ্রিল থেকে জুন মাসে তুলনামূলকভাবে বেশি হয়।
এখন ঝড়-বৃষ্টির সময় বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে কি কি করা উচিত আর উচিত নয় জেনে নিন:-
১) ঘনঘন বজ্রপাত শুরু হলে কোন অবস্থাতেই খোলা বা উঁচু জায়গায় থাকা যাবে না। এই অবস্থায় সবচেয়ে ভালো পাকা দালানের নিচে আশ্রয় নেওয়া। এমনকি পুকুর, দিঘি বা কোন জলাশয় এর কাছেও থাকবেন না।
২) কোন অবস্থাতেই গাছের নিচে আশ্রয় নেওয়া যাবে না। কারণ উঁচু গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাত সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই গাছপালা থেকে অবশ্যই দূরে থাকুন।
৩) বজ্রপাত হওয়ার সময় জানলা খুলবেন না, কারণ জানলার ধাতব বস্তু অনেক সময় বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে।
৪) এছাড়াও সিঁড়ির কল, ধাতব কল, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করা উচিত না। এমনকি ল্যান্ড টেলিফোনও। বজ্রপাতের সময় এগুলোর সংস্পর্শে এসে অনেকেই আহত হন।
৫) বজ্রপাত শুরু হওয়ার আগেই বাড়ির সমস্ত বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন (টিভি, কম্পিউটার, ফ্রিজ ইত্যাদি)। বজ্রপাত শেষ হওয়া না পর্যন্ত এগুলি ব্যবহার করবেন না।
৬) এই দুর্যোগের সময় রাস্তায় গাড়িতে থাকলে দ্রুত সম্ভব বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করুন। যদি প্রচন্ড বজ্রপাত ও বৃষ্টির সম্মুখীন হন তাহলে গাড়ি কোন পাকা ছাউনির নিচে নিয়ে যান। এমনকি গাড়ি কাঁচে হাত দেওয়া পর্যন্ত বিপদজনক হতে পারে।
৭) ঝড় বৃষ্টির সময় রাস্তায় জল জমা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে বজ্রপাত অব্যাহত থাকলে সেই সময় রাস্তায় বের না হওয়ায় ভালো। একে তো বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। উপরন্তু কোথাও বাজ পড়লে বিদ্যুৎপৃষ্ট হবারও সম্ভাবনা থেকেই যায়।
৮) বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতো বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপদজনক। যদি একান্ত বেরোনোর প্রয়োজন হয় তবে পা ঢাকা জুতো পরেই বের হন।
৯) বাজ পড়ার সময় ফাঁকা মাঠে থাকলে নিজেকে গুটিয়ে রাখার চেষ্টা করুন। তাড়াতাড়ি পায়ের আঙ্গুলের উপর ভর দিয়ে এবং কানে আঙ্গুল দিয়ে মাথা নিচু করে বসুন।
১০) বজ্রপাতের সময় ভুলেও ধাতব যুক্ত ছাতা ব্যবহার করবেন না, প্রয়োজন হলে প্লাস্টিক হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করতে পারেন।
সবশেষে, বজ্রপাতে কেউ আহত হলে বৈদ্যুতিক শকের মতই তার চিকিৎসা করতে হবে। প্রয়োজনে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে এবং ওই আহত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস, হৃদস্পন্দন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।