হিন্দুধর্মে ভগবান শ্রীরামচন্দ্র অতি শ্রদ্ধার সাথে পূজিত হন। অযোধ্যায় রাজা দশরথ ও কৌশল্যার ঘরে রামচন্দ্র জন্ম নিয়েছিলেন বলে হিন্দুদের কাছে এটি একটি তীর্থ ও আরাধনার কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে। বিশ্বের প্রায় সমস্ত মুসলিম ভিত্তিকদেশগুলিতে হিন্দু রীতিনীতি ও সংস্কৃতি নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এমন একটি মুসলিম দেশ রয়েছে যেখানে রামায়ণ একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। এমনকি সেখানে ভগবান রামকে বীরের মতো পূজা করা হয়।
আমরা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়ার কথা বলছি। ইন্দোনেশিয়ার জনসংখ্যা প্রায় ২৫ কোটি। ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যার দেশ। ভগবান রামের প্রতি এখানকার মানুষদের একটি বিশেষ জায়গা এবং শ্রদ্ধা রয়েছে। এদেশের মুসলমানরা রামায়ণকে একটি উপাস্য শাস্ত্র হিসাবে বিবেচনা করে।
জানিয়ে রাখি, ইন্দোনেশিয়া ও ভারতবর্ষের রামায়ণের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ভারতবর্ষে রামের জন্ম হয় অযোধ্যাতে আর ইন্দোনেশিয়ায় রামের জন্ম হয় যোগ্য নামক স্থানে। ইন্দোনেশিয়ায় রামায়ণ ‘কাকনিক’ নামে পরিচিত। এদেশের রামায়ণের কবি হলেন যোগেশ্বর।
ইন্দোনেশিয়ার রামায়ণে ২৬টি অধ্যায় রয়েছে। এদেশে রামায়ণে ভগবান রামের পিতা দশরথকে বিশ্বরঞ্জন বলা হয়। এখানে রামায়ণ শুরু হয় ভগবান রামের জন্মের সাথে এবং এই আনন্দে ইন্দোনেশিয়ান বাদ্যযন্ত্র গামলান বাজানো হয়।
১৯৭৩ সালে ইন্দোনেশিয়ার সরকার আন্তর্জাতিকভাবে রামায়ণ সম্মেলন করে। বিশ্বের প্রথম কোন মুসলিম দেশ অন্য ধর্মের সম্মানে এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। আজও ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় পাথরের উপর খোদিত রামায়ণের কথা দেখতে পাওয়া যায়।