গত সোমবার রাতে লাদাখের পূর্ব সীমান্তে গালগ্যান উপত্যকায় ভারত ও চীন সেনাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বাঁধে। এর ফলাফল হয় অতি ভয়াবহ। চীনের অতর্কিত হামলায় শহীদ হয়েছেন ২৩ জন ভারতীয় সেনা, যার মধ্যে রয়েছেন একজন কর্নেল সন্তোষ বাবু। এই রাত কতটা ভয়াবহ ছিল তা লেহ এর হাসপাতাল থেকে বেঁচে ফেরা এক সৈনিকের মুখ থেকে জানা গিয়েছে।
সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, চীনের এই অতর্কিত হামলা থেকেই শুধু মৃত্যু হয়নি, তীব্র কনকনে ঠান্ডাতেও মৃত্যু হয়েছে অনেকেরই। প্রাণে বেঁচে ফেরা এক সেনা আধিকারিক এর মুখ থেকে জানা গিয়েছে যে, বহু নিরস্ত্র ভারতীয় সেনাকে ওরা মেরেছে। কাঁটাতার জড়ানো লাঠির আঘাতে অনেকেই বাঁচার জন্য গালওয়ান নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এর ফলে অতি কনকনে ঠান্ডা জলে তাদের মৃত্যু হয়।
সরকারি সূত্র মতে, কমপক্ষে ২৪ জন জওয়ান মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। আর অন্যদিকে প্রায় ১১০ জন ভারতীয় সেনা চিকিৎসাধীনে রয়েছেন। ঘটনার সূত্রপাত হয় গত সোমবার রাতে। খবর সূত্রে জানা গিয়েছে যে, পূর্বের আলোচনায় যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল সেই অনুযায়ী লাদাখের বিভিন্ন অংশ থেকে ভারত এবং চীন দুই পক্ষই সেনা সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।
এরপর কোন এক কারণে চীনারা গালওয়ান সীমান্ত থেকে সরে যেতে চাননি। এরপর তারা বড় বড় পাথর ছুড়তে থাকে ভারতীয় সেনাদের লক্ষ্য করে। সম্পূর্ণ নিরস্ত্র অবস্থাতেই প্রাণ দিতে হয় বহু ভারতীয় সেনাকে।
ভারতীয় সেনার দাবি, অন্তত ৪৩ জন চীনা সেনা ভারতের পাল্টা হামলায় আহত হয়েছেন এবং ৯ জন মারা গেছে। বৈঠকে যে আলোচনা হয়েছিল তা লংঘন করে চীনারা কেনোই বা ভারতীয় সীমান্তে তাবু রেখে দিতে চেয়েছিল? এই বিষয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে ভারতীয় সেনারা তাদের তাঁবু গুড়িয়ে দেয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৭ সালের পর এই প্রথম লাদাখ সীমান্তে ভারত ও চীন সেনাদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ হল। এর আগেও হাতাহাতি হয়েছে কিন্তু গোলাগুলির মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। ৫০ বছরের চুক্তি লঙ্ঘন করে চিনারা অতর্কিতভাবে ভারতীয় সেনাদের ওপর আক্রমণ করলো।