‘নজফগড়ের নবাব’ বীরেন্দ্র শেহবাগ ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছিলেন। যদিও তার অভিষেক হয় অজয় জাদেজার নেতৃত্বে কিন্তু ব্যর্থ হওয়ায় সেদিন পাশে পেয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলীকে। প্রথম দিকে তিনি মিডিল অর্ডারে ব্যাট হাতে নামতেন। এরপর তিনি ওপেন করার সুযোগ পেয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলী জন্যই। এমনকি তাকে খোলাখুলিভাবে ব্যাটিং করার জন্য লাইসেন্সও দিয়েছিলেন সৌরভই।
আসলে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে তিনি শুরুতেই আউট হয়ে যান। শেহবাগ জানিয়েছেন, শোয়েব আখতারের বলটি এত দ্রুত গতিতে আসে তিনি ভালোভাবে দেখতেই পাননি। বোলটির গতিবেগ এতটাই ছিল যে তার ধারণার বাইরে। এরপর ভালো স্কোর করতে না পেরে টিম বাসের একদম পিছন দিকে তিনি মাথা গুঁজে বসে ছিলেন।
সৌরভ তার মানসিক অবস্থার কথা জানতে পেরে তার কাছে গিয়ে বলেছিলেন, পরের ম্যাচে তুই এত মার মারবি যেন সিলেক্টররা তোকে বাদ দেওয়ার কথা চিন্তা নাও করতে পারে। গুরমন্ত্র পাওয়ার পরের ম্যাচেই শেহবাগ একটি দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলেছিলেন। এরপর আর কখনো তাকে পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। সৌরভ গাঙ্গুলীর অধিনায়কত্বে তিনি ওপেন করার সুযোগ পান।
এক সময়ের সাধারণ মিডিল অর্ডার ব্যাটসম্যান হয়ে ওঠেন বিধ্বংসী ওপেনার। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের প্রতি প্রতিপক্ষ বোলারদের ধারণা ছিল যে তারা কখনো আক্রমণাত্মকভাবে খেলতে পারেন না। কিন্তু সেই ধারণাই জল ঢেলে দেন শেহবাগ। দেশে হোক বা দেশের বাইরে, যেমনই পিচ হোক না কেন তিনি প্রতিপক্ষ দলের বোলারদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন। এমনকি টেস্ট ক্রিকেটেও সীমিত ওভারের মতোই বোলারদের শায়েস্তা করতেন।
বীরেন্দ্র শেহবাগের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের পরিসংখ্যানের কথা বললে, ১০৪ টেস্টে ৪৯.৩৪ গড়ে ৮৫৮৬ রান, ২৫১ ওয়ানডেতে ৩৫.০৬ গড়ে ৮২৭৩ রান এবং ১৯টি টি-টোয়েন্টিতে ১৪৫ এর বেশি স্ট্রাইকরেট নিয়ে ৩৯৪ রান করেছেন। তিনি একমাত্র ভারতীয় হিসেবে টেস্টে দুবার ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। অন্যদিকে ওয়ানডেতে অধিনায়ক হিসেবে তিনি সর্বোচ্চ ২১৯ রানের ইনিংস খেলেছেন।