কোন সৈনিক মৃত্যুর পরেও সীমান্তে রক্ষীর ভূমিকায় অবস্থান থাকতে পারে কি? হ্যাঁ এটা সত্যি! তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, মৃত্যুর পরেও এক ভারতীয় সৈনিক দেশের জন্য আজও কর্তব্য পালন করে চলেছেন। অন্ধবিশ্বাস হোক বা অবিশ্বাস – কিন্তু এটা সেইসব এলাকার মানুষের মনে অগাধ বিশ্বাস রয়েছে বা ওখানে যারা গিয়েছিলেন। হরভজন সিং আমাদের কাছে হিরো, মৃত্যুর পরেও গত ৫০ বছরের বেশি ধরে দেশের সেবা করে চলেছে।
সৈনিকদের কথায় চীনের তরফ থেকে হওয়া যে কোন বিপদ হরভজন সিং ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সতর্ক করে দেয় যাতে কোনরকম খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়। এইজন্য ভারত ও চীনের ফ্ল্যাগ মিটিং এর সময় হরভজন সিংয়ের নামে একটি চেয়ার রাখা হয় যাতে তিনি মিটিংয়ে যোগদান করতে পারে।
হরভজন সিং এর জন্ম ৩০ শে আগস্ট ১৯৪৬ সালে গুজরাটে, যেটি বর্তমানে পাকিস্তানে। বাবা হরভজন সিং পাঞ্জাব রেজিমেন্টের ১৯৬৬ সালে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। যোগদানের ২ বছর পর সিকিমের একটি পার্বত্য এলাকায় পা পিছলে নিচে পড়ে গিয়ে মারা যান। মারা যাওয়ার তিন দিন পর যখন তার মৃতদেহ পাওয়া যায়নি তখন তিনি তার বন্ধুদের স্বপ্নে দেখা দিয়ে বলে দেন তার মৃতদেহের অবস্থান কোথায় আছে, ঠিক সেই জায়গাতেই মৃতদেহ পাওয়া যায়।
সমস্ত রকম রাষ্ট্রীয় মর্যাদার সঙ্গে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। এরপর থেকে তাকে ঘিরে সকলের বিশ্বাস হতে শুরু করে তখন তার একটি মন্দির হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই পর থেকে বাবা হরভজন সিংয়ের অলৌকিক ক্ষমতার পরিচয় সবাই পেতে থাকে। সেখানে বাবা হরভজন সিংয়ের সকল ব্যবহৃত জিনিস আছে।
বিশ্বাস করা হয়, আজও তিনি তার পর্যন্ত কর্তব্য পালন করে আসছেন। এজন্য তাকে মাইনে পর্যন্ত দেওয়া হয় এবং তার রাঙ্ক অনুযায়ী তাকে প্রমোশনও করা হয় এবং কিছু বছর আগে বাবা হরভজন সিংকে দুই মাসের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয় তার জন্য ট্রেনের সিট বুকিং করা হয়েছিল ও সৈনিকদের দিয়ে তার জিনিসপত্র গ্রামের পাঠানো হতো। তখন এই দুই মাস ওই বর্ডারে হাই অ্যালার্ট পর্যন্ত রাখা হয়েছিল।
কিছু মানুষ এই জিনিসটিকে অন্ধবিশ্বাস বলে মনে করেন এবং আদালতে পেশ করে, কারন সেনাবাহিনীতে কোন প্রকার অন্ধবিশ্বাস মেনে নেয়া বাঞ্ছনীয় নয় বলে। বাবা হরভজন সিংয়ের জন্য একটি আলাদা ঘর আছে এবং সেখানে প্রতিদিন তার পোশাক ও জুতো পরিষ্কার করা হয়। সেখানকার মানুষ জন বলেছেন পরিষ্কার করা জুতোয় দেখা যায় পরেরদিন কাদা লেগে থাকে এবং বিছানাও অগোছালো হয়ে থাকে। এই মন্দির সকল মানুষের বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। এখানে আসা প্রত্যেকটি নতুন সৈনিক প্রণাম করে যান।