প্রতি ভোররাতে ৩ টের সময় ঘটে একটি ঘটনা, যা অনেকেরই অজানা

এই সংস্কারটি বহু পুরনো দিনের। বহু মানুষই প্রতি ভোররাতে ঠিক এমনই এক ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন যার ফলে হয়তো তাকে বাকি রাতটা জেগে কাটাতে হয়েছে আবার ভাবতে ভাবতে ভোরবেলায় ঘুম এসে গেছে। পশ্চিম গোলার্ধের বিপুল সংখ্যক মানুষ এই ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন প্রায় রাতেই। ঘুম ভাঙ্গার পরে মনে হয়েছে নিছক কোনো স্বপ্ন, তবে সেটা “শয়তানের প্রহর” নামেই জানা যায়।

তবে কেন এই সময়টিতে শয়তানের প্রহর বলে সংশ্লিষ্ট করা হলো এই নিয়ে বহু চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণা করেছেন নৃবিজ্ঞানী থেকে ধর্মতত্ত্ববিদেরাও।

 

∆ ইউরোপের প্রাচীন ঐতিহ্য অনুযায়ী, এই সময়টাতে শয়তানেরা তাদের কু-কর্মকাণ্ডগুলি চালাতে থাকে পরের প্রহরের আগে পর্যন্ত। পৃথিবীতে যখন ধীরে ধীরে সূর্যালোক প্রবেশ করে তখন তারা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।

∆ খ্রিস্টধর্ম মতে, ধর্মপ্রচারক যিশুখ্রিস্টের ক্রুশবিদ্ধ এর সময় ছিল দুপুর তিনটার সময়। এই সময় টিকে অতি শুভ সময় ধরা হয়। তবে যারা যীশুর ঘোর বিরোধী ছিলেন তারা ব্যঙ্গ করে ১২ ঘণ্টা পিছিয়ে দিয়ে ভোর ৩ টের সময়কে শয়তানের প্রহর বলে দাবি করে।

∆ বহুযুগ ধরে উপাসক সম্প্রদায় মানুষেরা এই সময়টিকে তাদের যোগ্য করার সেরা সময় হিসেবে বেছে নিয়েছেন। বলাবাহুল্য যে এই সময়টি একেবারে শুভ নয়। এই সময়টিতে হত্যা, রক্ত ও আরো নানান অনভিপ্রেত ব্যাপারগুলি ঘটে থাকে।

∆ অনেকের মতে, রাত তিনটার সময় ঘুম ভেঙে গেলে তখনই ঘুমিয়ে পড়া উচিত, নাহলে তার সাথে এমন কিছু ঘটতে পারে হয়তো তিনি সামলাতে পারবেন না।

3 Reasons You Wake Up At Night And What To Do About It - Your ...

∆ পশ্চিমী দেশের তান্ত্রিকরা এই সময় টিকে তাদের কার্যকলাপ এর সবচেয়ে সেরা সময় বলে বেশি নিয়েছেন। কারণ তারা বিশ্বাস করেন এই সময়ে যাদু-টোনা, অভিচার ইত্যাদি গুলি প্রয়োগ করলে কখনোই বিফলে যায়না।

কিন্তু বাস্তবের সাথে সত্যিই কি রাত ৩টের সাথে কোন সম্পর্ক যুক্ত? বিশেষজ্ঞদের মতে এই সময়ে শরীর সবচেয়ে দুর্বল থাকে তাই ঘুম ভেঙে গেলে অস্বাভাবিক দৃশ্য প্রত্যক্ষ হতেই পারে। এমনকি এই সময়ে হৃদস্পন্দনও সঠিক মাত্রায় কাজ করে না, তাই কিছুটা অস্বাভাবিক লাগে। তাই অনেকেই ভয় পেয়ে গলা শুকিয়ে জল খান।

তবে ভারতীয় পরম্পরা মতে, এই সময়কে “ব্রাহ্ম মুহূর্ত” বলা হয়ে থাকে। তাদের মতে এটি একটি শুভক্ষণ। এই সময় ঘুম থেকে ওঠার সাথে কোনভাবেই “অশুভ”র সঙ্গে জড়িত নেই।