Cursed Rivers of India: ভারতবর্ষ নদীমাতৃক দেশ। এদেশে ছোট বড় অসংখ্য নদীর রয়েছে। প্রতিটি নদীর পেছনে নানান ইতিহাস ও গল্প রয়েছে। এর মধ্যে এমন কিছু নদী রয়েছে যেগুলো কোনও রহস্য থেকেও কম নয়। যেখানে গঙ্গার (Ganges) মত নদীকে ভারতীয়রা পবিত্র বলে পূজা করেন, সেখানে এমন একটি নদী রয়েছে যার থেকে মানুষ সব সময় দূরত্ব বজায় রেখেছে। এমনকি এর জল ভুলেও কেউ স্পর্শ করে না। কোন প্রাণীও এই জলে বাস করে না।
ভারতবর্ষের এই নদীটির নাম কর্মনাশা (Karnasha)। এটি উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীটির নাম অনুসারে, এই নদী আপনার কর্মকে ধ্বংস করতে পারে। উত্তরপ্রদেশে শোনভদ্র বারানসি ও গাজীপুরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কর্মনাশা নদীটি বিহারের বক্সারের কাছে পৌঁছে গঙ্গায় মিলিত হয়েছে।
উত্তর প্রদেশ ও বিহার (Uttar Pradesh and Bihar) দুই রাজ্যের মানুষ এই নদীর জল ব্যবহার করতে ১০০ বার ভাবেন। এমনকি শুভ কাজ করতে গেলেও এই নদীর পাড় দিয়ে কেউ যায় না। লোকমুখে প্রচলিত আছে, এই জল যে কেউ স্পর্শ করবে, সে ধ্বংস হয়ে সর্বহারা হয়ে পড়বে। তাই এই কারণেই কর্মনাশা ‘অভিশপ্ত নদী’ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে।
আসলে কর্মনাশা নদীটির অভিশপ্ত হওয়ার পেছনে এক পৌরাণিক (Myth) কাহিনী রয়েছে। কথিত আছে যে, একবার রাজা হরিশচন্দ্রের পিতা সত্যব্রত তার গুরু বশিষ্ঠের (Vasishta) কাছে দেহ নিয়ে স্বর্গে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। গুরু তার ইচ্ছা পূরণ করতে অস্বীকার করেন এবং তারপর রাজা সত্যব্রত (Satyavarta) গুরু বিশ্বামিত্রকে (Vishwamitra) অনুরোধ করেন। বশিষ্ঠের সঙ্গে বিশ্বামিত্রের শত্রুতা ছিল, এই কারণে তিনি সত্যব্রতকে তার তপস্যার জোরে স্বর্গে পাঠিয়েছিলেন। এমন দৃশ্য দেখে ইন্দ্রদেবও রেগে যান।
এরপর বিশ্বামিত্র তার তপস্যায় রাজাকে স্বর্গ ও পৃথিবীর মাঝখানে থামিয়ে দেবতাদের সাথে যুদ্ধ করেন। এই সময় রাজা সত্যব্রত উল্টোদিকে ঝুলে ছিলেন। যে কারণে তার মুখ থেকে লালা বের হতে শুরু করে। মনে করা হয়, সেই মুখ থেকে নিঃসৃত লালার কারণে নদীটির সৃষ্টি হয়েছিল। তখন গুরু বশিষ্ঠ রাজা সত্যব্রতকে চন্ডাল হওয়ার অভিশাপ দেন। রাজার লালায় নদীটি তৈরি হয় এবং অভিশাপ পেয়ে এই নদীটিও অভিশপ্ত হয়ে গিয়েছে বলে মানুষ এখনো বিশ্বাস করে।