চাণক্যের ২০টি মহামূল্যবান বাণী আপনাকে সঠিক পথ দেখাতে পারে

কৌটিল্য বা বিষ্ণুগুপ্ত আবির্ভাব হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ৩৭০-২৮৩ অব্দে। ইতিহাসে তিনি ‘চাণক্য’ নামে পরিচিত। তিনি একজন প্রাচীন ভারতীয় দার্শনিক অর্থনীতিবিদ এবং রাজ উপদেষ্টা। তিনি তার অর্থশাস্ত্র নামক গ্রন্থে যে সকল বাণীগুলি রচিত করেছেন তা আজকের জীবনে খুবই গ্রহণযোগ্য ও কার্যকর হতে পারে — সে বিষয়ে কোনো সংশয় নেই।

👉🏻 এবার দেখে নেওয়া যাক চাণক্যের মহামূল্যবান বাণী গুলি:-

১) গুণহীন মানুষ যদি উচ্চ বংশ জন্মায় তাতে কিছু যায় আসে না। নীচকুলে জন্মেও যদি কেউ শাস্ত্রজ্ঞ হয়, তবে দেবতারাও তাকে সম্মান করেন।

২) যেইসব শিক্ষার্থীরা দিনের বেশিরভাগ সময় ঘুমিয়ে নষ্ট করে আর প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ঘুমানো পছন্দ করে, সেইসব শিক্ষার্থীরা জীবনে সফল হতে পারেনা এবং তারা বেশিরভাগ কাজ ঠিক মতো করতে অক্ষম হয়। 

৩) নানাভাবে শিক্ষা পেলেও দুর্জন সাধু হয় না, নিমগাছ যেমন আমূল জলসিক্ত করে কিংবা দুধে ভিজিয়ে রাখলেও কখনও মধুর হয় না।

৪) যারা পরিশ্রমী,তাদের জন্যে কোনকিছুই জয় করা অসাধ্য কিছু নয়। শিক্ষিত কোন ব্যক্তির জন্যে কোন দেশই বিদেশ নয়।

৫) বইয়ে থাকা বিদ্যা, পরের হাতে থাকা ধন একইরকম। প্রয়োজন কালে তা বিদ্যাই নয়, ধনই নয়।

৬) উৎসবে, বিপদে, দুর্ভিক্ষে, শত্রুর সঙ্গে সংগ্রামকালে, রাজদ্বারে এবং শ্মশানে যে সঙ্গে থাকে, সে-ই প্রকৃত বন্ধু।

৭) একটিমাত্র বৃক্ষে লাগা আগুনের দ্বারা যেমন সম্পূর্ণ বন ভস্মে পরিণত হতে পারে তেমনি একজন কুপুত্রের দ্বারাও সম্পূর্ণ পরিবার ধ্বংস হতে পারে।

৮) যারা রূপযৌবনসম্পন্ন এবং উচ্চকুলজাত হয়েও বিদ্যাহীন,তাঁরা সুবাসহীন পলাশ ফুলের মত বেমানান।

৯) হাতি থেকে একহাজার হাত দূরে, ঘোড়া থেকে একশ হাত দূরে, শৃঙ্গধারী প্রাণী থেকে দশহাত দূরে থাকবে। অনুরূপ দুর্জনের কাছ থেকেও যথাসম্ভব দূরে থাকবে।

১০) সাপ নিষ্ঠুর খলও নিষ্ঠুর, কিন্তু সাপের চেয়ে খল বেশি নিষ্ঠুর। সাপকে মন্ত্র বা ওষধি দিয়ে বশ করা যায়, কিন্তু খলকে কে বশ করতে পারে?

১১) দুর্বলের বল রাজা, শিশুর বল কান্না, মূর্খের বল নীরবতা, চোরের মিথ্যাই বল।

১২) দুই ধরনের হিংসুক প্রাণী আছে, যথা সাপ ও সাপের মতোই ক্রূর স্বভাব বিশিষ্ট মানুষ। এরমধ্যে সাপের মতো ক্রূর স্বভাব বিশিষ্ট মানুষ অধিক ভয়ানক।

১৩) স্বভাবত কেউই আমাদের বন্ধু কিংবা শত্রু হয়না, একমাত্র কাজের দ্বারাই মানুষ আমাদের বন্ধু কিংবা শত্রু হয়।

১৪) চঞ্চল মন যেকোনো বিষয়ে সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করার পিছনে সবচেয়ে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।

১৫) একজন পন্ডিত ব্যক্তিও ঘোর দুঃখ-কষ্টের স্বীকার হতে পারেন যদি সে, একজন মূর্খ ব্যক্তিকে উপদেশ দেন অথবা কোনো দুষ্ট স্ত্রীর ভরন পোষণে লিপ্ত হন কিংবা কোনো দুঃখী ব্যক্তির সাথে দৈনন্দিন সম্পর্ক স্থাপন করেন। 

১৬) যেখানে আপনার কোনো বন্ধু নেই অথবা যেখান থেকে আপনি কোনো জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন না, এইরকম জায়গায় মানুষের একদিনও থাকা উচিত নয়। 

১৭) ঋণগ্রহনকারী পিতা, অসতী মাতা, অধিক সুন্দরী স্ত্রী এবং অজ্ঞ পুত্র, পারিবারিক জীবনের এক বড় শত্রু। 

১৮) অগ্নি,শত্রু ও রোগব্যাধি সম্পূর্ণ নির্মূল করা উচিত নাহলে অন্যথায় তা বাড়তেই থাকবে। 

১৯) চাঁদ নক্ষত্রসমূহের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে,একজন সুশাসক পৃথিবীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং স্বামী ও স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যেও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। 

২০) গুরু শিষ্যকে যদি একটি অক্ষরও শিক্ষা দেন, তবে পৃথিবীতে এমন কোনও জিনিস নেই, যা দিয়ে সেই শিষ্য গুরুর ঋণ শোধ করতে পারে।