দেশের এই গ্রামের নারীরা পোশাক পরে না, কেন এই প্রথা চালু জানলে অবাক হবেন!

A village in India: দেশ ও বিশ্বে এমন অনেক রীতিনীতি রয়েছে, যা নিয়ে নানান তর্কবিতর্ক ও সমালোচিত হয়। ভারতবর্ষের তেমনি এক গ্রামে অদ্ভুত প্রথা চালু রয়েছে। হিমাচল প্রদেশের মণিকর্ণা উপত্যকার পিনি গ্রামের নারীরা যুগ যুগ ধরে ঐতিহ্য অনুসরণ করে এখনো পোশাক পরেন না। একইভাবে এই গ্রামের পুরুষদের জন্য একটি কঠোর নিয়ম চালু রয়েছে, যা তাদের অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক।

রীতি অনুযায়ী বছরে পাঁচটি দিন আছে, যখন মহিলারা কোন পোশাক পরে না। এমনকি পুরুষরা ঐদিনে অ্যালকোহল বা অন্যান্য কিছু গ্রহণ করতে পারে না। পিনি গ্রামে এই প্রথার একটি মজার ইতিহাস রয়েছে। তবে এই বিশেষ পাঁচদিনে নারীরা ঘর থেকে বের হন না। কিন্তু কিছু মহিলা আজও এই প্রথা মেনে চলেন নিজের ইচ্ছায়। প্রতিবছর পিনি গ্রামের মহিলারা শ্রাবণ মাসের পাঁচদিন কাপড় পরেন না।

Image

কথিত আছে, যে মহিলা এই প্রথা মেনে চলেন না, সে কয়েক দিনের মধ্যেই খুবই খারাপ খবর শুনতে পান। একইভাবে পুরো গ্রামের স্বামী-স্ত্রীরাও একে অপরের সাথেও কথা বলে না। এই সময় তারা একে অপরের থেকে দূরে থাকেন। পুরুষদের জন্য এই প্রথা মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। এই পাঁচটা দিন পুরুষদের মদ ও মাংস খাওয়ার নিয়ম নেই। যদি কেউ এই নিয়ম লঙ্ঘন করে তার ক্ষতি হয় বলে জানা যায়। 

এমনকি এই পাঁচ দিনে স্বামী স্ত্রী একে অপরকে দেখে হাসতেও পারে না। প্রথা অনুসারে এর নিষেধাজ্ঞা উভয়ের উপর বলবৎ থাকে। এই সময় পিনি গ্রামে বাইরের কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। এমনকি বাইরের লোকজনও তাদের এই বিশেষ উৎসবে অংশ নিতে পারে না।

Image

প্রথার পেছনের গল্প কী?
কথিত আছে, বহুকাল আগে পিনি গ্রামে অসুরের আতঙ্ক ছিল। এর পর পিনি গ্রামে ‘লাহুয়া ঘোঁদ’ নামে এক দেবতা আসেন। দেবতা রাক্ষসকে বধ করেন এবং পিনি গ্রামকে অসুরদের আতঙ্ক থেকে রক্ষা করেন। এই সমস্ত রাক্ষসরা গ্রামের বিবাহিত মহিলাদের সুন্দর সুন্দর পোশাক পরিয়ে নিয়ে যেত। দেবতারা অসুরদের বধ করে এর থেকে নারীদের রক্ষা করেছিলেন। সেই থেকে দেবতা ও অসুরদের মধ্যে ১০ দিন মহিলাদের পোশাক না পরার রীতি চলে আসছে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে নারীরা যদি পোশাকে সুন্দর দেখায় তবে আজও অসুররা তাদের তুলে নিয়ে যেতে পারে।