পরিবারের কেউ মারা গেলে ১৩ দিন মাছ-মাংস খেতে নেই কেন বা খেলে কী হবে?

যে কারণে মৃত্যুর কয়েকদিন নিরামিষ খেতে হয়

হিন্দু ধর্মে এমন অনেক বিধান রয়েছে যেগুলো পালন করা অবশ্যই কর্তব্য। এর মধ্যে হলো পরিবারের কারও মৃত্যুর পর টানা ১৩ দিন আমিষ (non-vegetarian) জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকা উচিত। যদিও এই নিয়ে অনেকের মাথায় প্রশ্ন ঘোরাফেরা করে বা মাছ মাংস যদি খাওয়া হয় তাহলে কী হতে পারে?

গরুড় পুরানে (Garuda Purana) এই সকলের বিধানের কথা বলা হয়েছে। শাস্ত্র মতে, কোন ব্যক্তির মৃত্যুর ১৩ দিন পর্যন্ত তার আত্মা পরিবারের সঙ্গেই থাকে। এই সময় সে প্রচন্ড দুঃখী অবস্থায় থাকে, কারণ সে চাইলেও কারো সাথে কথা বলতে পারেনা। সে তার সাথে জিনিসগুলোও ব্যবহার করতে পারেনা। এমনকি সে তার প্রিয় খাবারগুলোও খেতে পারে না।

এবার যদি মৃত ব্যক্তির পরেও ওই পরিবারের মধ্যে কোনো শোক না থাকে বা তাকে ভুলেও সকলেই আনন্দ করে কিংবা ভালো-মন্দ খাবার খায়, তাহলে সেই আত্মার দুঃখের পরিমাণ আরো অনেক বেড়ে যায়। এই জন্যই ওই মৃত পরিবারে কয়েকদিন নিরামিষ খাবার ও হাসি উল্লাস থেকে বিরত থাকা হয়।

আত্মার শান্তি বজায় রাখার জন্যই ওই কদিন ভালো-মন্দ খাবার খাওয়া হয় না। কারণ তারা কিছুদিন পরেই তাদের ইহলোকের প্রিয়জনদের ছেড়ে চলে যাবে। এই ক’টা দিন বৈরাগীদের মতো জীবনযাপন করতে হয়। যাতে এইসব দেখে তার সমস্ত মোহ মায়া ত্যাগ করে সে শান্তিতে পরলোক গমন করতে পারে।

আগেই বলা হয়েছে, মৃত্যুর ১৩ দিন পরিবারের সাথেই তার আত্মা থাকে। সেই সঙ্গে নেগেটিভ এনার্জিরও প্রবেশ ঘটে। সেই ব্যক্তির যদি কোন অপূরণীয় ইচ্ছা থেকে থাকে তাহলে তার আশেপাশের আত্মারা সেই বাড়িতে চলে আসে।

এইসময় যদি ওই বাড়িতে হাসি-উল্লাস, মদ-মাংস খাওয়া কিংবা সহবাস করা হয় তাহলে সকল আত্মারা পরিবারের কারও শরীরে প্রবেশ করে ওই মৃত ব্যক্তির অপূর্ণ থাকার ইচ্ছাটা পূরণ করে। সম্ভবত, এই কারণেই ওই ১৩ দিন সমস্ত বিধিনিষেধ পালন করে চলা হয়, যাতে সেই একসময় ওই আত্মা বাড়ি ছেড়ে চলে যায়।