এই বিশ্বসংসারে কর্তা হিসেবে আমরা দেবাদিদেব মহাদেবকে মেনে চলি। কিন্তু কখনো ভেবেছেন কি মহাদেব সবসময় বাঘের ছাল পরে থাকেন কেন? অন্যান্য সমস্ত দেবতা থেকে তিনি একেবারেই আলাদা। বাঘের চামড়াকে তিনি বস্ত্র হিসাবেও ব্যবহার করেন এবং এটি কি অর্থ বহন করে তা অনেকেরই অজানা।
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে কথিত রয়েছে যে, মহাদেব একবার হাঁটতে-হাঁটতে বনের মধ্যে গিয়েছিলেন আর সেই বনেই কয়েকজন ঋষি তাদের পরিবার সহ বসবাস করতেন। মহাদেব যখন ঐ বনে ঘোরাফেরা করছিলেন তখন তার পুরুষালি চেহারা দেখে সেখানকার ঋষিদের স্ত্রীরা মুগ্ধ হয়ে পড়েন।
শিবের চেহারার প্রতি দুর্বল ও আকৃষ্ট হয়ে পড়েছিলেন ঋষিদের স্ত্রীরা। এটা জানার পর ঋষিরা অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে শিবকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন। যদিও তারা ভগবান শিবের সম্পর্কে কোনকিছুই জানতেন না।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ঋষিরা ওই বনের মধ্যে একটি বড়গর্ত খুঁড়লেন ও তার মধ্যে একটি বাঘ ছেড়ে দেন। শিব ঘুরতে ঘুরতে তখন ওই গর্তের মধ্যে পড়ে যান। এটা দেখে ঋষিরা অত্যন্ত খুশি হয়ে ওঠে। কিন্তু বেশিক্ষণ তাদের খুশি টিকলো না। পরে তারা শিবের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন।
আসলে শিব যখন ওই গর্তের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন তখন বাঘ ও শিবের মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই হয়। শিব সহজেই বাঘটিকে হত্যা করেন এবং তার ছাল ছাড়িয়ে বস্ত্র হিসেবে পরিধান করেন। আর তখন থেকেই তিনি একমাত্র দেবতা হিসেবে বাঘের ছাল পরেন।
এমন দৈবিক শক্তি রেখে ঋষিরা বুঝতে পারেন তিনি হলেন যে দেবাদিদেব মহাদেব। এরপর শিবের কাছে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কথিত আছে, দেবাদিদেব মহাদেব তিনি যে বাঘের ছাল পরেন — এর অর্থ হল ‘শক্তির প্রতীক’।