এই মহিলা ভারতে এসেছিলেন, কিন্তু দেশে ফিরতে পারেননি, তাকে ভারতরত্ন দিয়ে সম্মানিত করা হয়

ভারতে এসে ভারতরত্ন পুরস্কার পেয়েছিলেন এই মহিলা

এক খ্রিস্টান মহিলা সাধক যুগোস্লাভিয়া থেকে নয় দশকেরও বেশি আগে ভারতে এসেছিলেন। এরপর তিনি আর দেশে ফিরতে পারেননি। তিনি ভারতের দরিদ্র ও ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য এত বেশি কাজ করেছেন যে সরকার তাকে ভারতরত্ন দিয়ে সম্মানিত করেছে।

এ ছাড়া তিনি ১৯৭৯ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি আমেরিকা ও রাশিয়ার সর্বোচ্চ পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন। আসলে মাদার তেরেসার কথা বলা হয়েছে যিনি ১৯২৯ সালের ৬ই জানুয়ারি ভারতে আসেন।

Image

২৬ আগস্ট ১৯১০ সালে জন্মগ্রহণকারী মাদার তেরেসার আসল নাম ছিল অ্যাগনেস গোঁঝা বয়াজিজ্জু। মাত্র ৯ বছর বয়সে তার বাবা মারা যান। তারপর সে তার মাকে সেলাই ও সূচিকর্ম করে সাহায্য করতেন। শৈশবের বঞ্চনার কারণে অসহায় মানুষকে সাহায্য করার বোধ তার মনে জেগে ওঠে। এই অনুভূতি এতটাই প্রবল হয়ে ওঠে যে, তিনি তার সমগ্র জীবন নিঃস্ব মানুষের কল্যাণে উৎসর্গ করেন।

মাদার তেরেসা যখন স্নাতক শেষ করে খ্রিস্টান মিশনারিদের জন্য কাজ শুরু করেন, তখন তিনি সন্ন্যাসিনী হন। সন্ন্যাসী হিসেবে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর, তিনি কলকাতার বাংলার স্কুলে কাজ শুরু করেন। প্রশ্ন জাগে যে কেন তিনি ভারতকেই তার কর্মস্থল হিসেবে বেছে নিলেন?

Image

আসলে মাদার তেরেসা প্রথম কলকাতায় আসার পর সেন্ট তেরেসা স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। তিনি দেখেছেন ভারতের দারিদ্র্য, অনাহার, অসহায়ত্ব ও ক্ষমতাহীনতা। এরপর তিনি গরিবদের জন্য কিছু করার পরিকল্পনা করেন এবং কলকাতায় দরিদ্রদের জন্য একটি বস্তির স্কুল খোলেন।

এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ভারতের দরিদ্ররা ক্ষুধায় মারা যাচ্ছিল। শিশু ও নারীদের অবস্থা ছিল সবচেয়ে খারাপ। মাদার তেরেসা গরিব শিশুদের পড়াতে শুরু করেন। অসুস্থদের চিকিৎসা শুরু করেন। তিনি বলেন, সবাই এক ঈশ্বরের সন্তান।

Image

দেশ স্বাধীন হলে ভয়াবহ দাঙ্গা হয়। মাদার তেরেসা দাঙ্গায় আক্রান্তদের সেবা করা শুরু করেন। একই সময়ে তিনি ‘নির্মল হৃদয়’ নামে একটি সংগঠন খোলেন। তার সংগঠন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেক অভাবীকে সেবা করেছে। কোন দরিদ্র ব্যক্তি মারা গেলে তার সংগঠন তাদের ধর্ম অনুযায়ী তার শেষকৃত্য করত।

মাদার তেরেসা স্বাধীনতার পরপরই ভারতীয় নাগরিকত্ব নেন। তিনি চমৎকার বাংলা বলতেন। তাঁর সম্পর্কে বলা হয়েছে যে তিনি অনেক অলৌকিক কাজ করেছিলেন। ১৯৯২ সালে নবীন চাওলার লেখা বইয়ের উপর ভিত্তি করে চলচ্চিত্র এবং তথ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে। বইটিতে মাদার তেরেসার অলৌকিক ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।