ভারতের এমন একটি রেলস্টেশন ৪২ বছর ধরে বন্ধ ছিল শুধুমাত্র একটি মেয়ের কারণে

এক অদ্ভুত কারণে ভারতের একটি রেলস্টেশন ৪২ বছর ধরে বন্ধ ছিল

Indian Railway Stations: ভারতীয় রেলস্টেশন সম্পর্কিত এমন অনেক গল্প রয়েছে যা খুব কম লোকই জানেন। আবার এমন কিছু তথ্য আছে যা আপনাকে অবাক করতে পারে। এই প্রতিবেদনে এমন একটি ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে যে রেলস্টেশনটি ৪২ বছর ধরে বন্ধ ছিল। আর এই পুরো ঘটনার পেছনে ছিল একজন মেয়ে।

এখান দিয়ে ট্রেন চলাচল করলেও ৪২ বছর ধরে একটিও ট্রেন থামেনি। আসলে এই রেলস্টেশনটি পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায় অবস্থিত, যার নাম বেগুনকোদর (Begunkodar) রেলওয়ে স্টেশন। এই রেলওয়ে স্টেশনটি ১৯৬০ সালে খোলা হয়েছিল। সাঁওতাল রানী শ্রীমতি লোচনকুমারী এই স্টেশনটি চালু করার জন্য বিশেষ অবদান রেখেছিলেন।

Image

এই রেলস্টেশনটি চালু হওয়ার পর কয়েক বছর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও, তারপর অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে থাকে। ১৯৬৭ সালে একজন রেলওয়ে কর্মচারী এখানে একজন মহিলা ভূত দেখেছেন বলে দাবি করেছিলেন। তিনি তার সহকর্মীদের এই বিষয়ে জানালেও তার কথা সকলেই উপেক্ষা করেন এবং গুজব বলে উড়িয়ে দেন।

কিন্তু এই ঘটনার কয়েক দিনের পরেই একটি বড় ঘটনা সবাইকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করল ওই কর্মচারীর কথা। আসলে কয়েকদিন পর রেলওয়ে কোয়ার্টারে বেগুনকোদরের স্টেশন মাস্টার ও তার পরিবারকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এই ঘটনার পিছনে একজন মহিলা ভুতের হাত রয়েছে বলে স্থানীয়রা দাবি করতে থাকে। এরপর এই ভৌতিক ঘটনা লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে।

Image

স্থানীয়দের দাবি, সূর্যাস্তের পর যখনই এই স্টেশনের উপর দিয়ে কোন ট্রেন যেত, সেই ট্রেনের সঙ্গে ছুটতে থাকে এই মহিলা ভূত। শুধু তাই নয় মাঝে মাঝে ট্রেনের চেয়েও দ্রুত ছুটতেন। অনেক সময় তাকে ট্রেনের ট্রাকেও নাচতে দেখা গেছে। এমন ঘটনার পর এই রেলস্টেশনকে ভুতুড়ে বলা হয়। এই স্টেশনের আতঙ্ক এতোটাই ছড়িয়ে পড়েছিল যে মানুষ এখানে আসা বন্ধ করে দেয়।

এর ফলে কোনও রেল কর্মচারী সেখানে কাজ করতে আসতে চাইত না। এমনকি ট্রেনগুলিও এখানে থামত না কারণ এই স্টেশন থেকে যাত্রীরা ওঠানামা বন্ধ করে দিয়েছিল। জানা যায়, লোকো পাইলটরাও এই স্টেশনের কাছাকাছি এলেই ট্রেনের গতি বাড়িয়ে দিতেন, ফলে মানুষরাও ভয় পেয়ে সমস্ত দরজা জানালা বন্ধ করে দিত।

প্রায় ৪২ বছর ধরে এই স্টেশনটির চিত্র একই ছিল কিন্তু ২০০৯ সালে গ্রামবাসীদের অনুরোধে স্টেশনটি আবার চালু করা হয়। এরপর থেকে সেখানে আর কোন ভূত দেখার দাবি করা হয়নি বা কোন ভৌতিক কার্যকলাপ ঘটেনি। কিন্তু আজও সন্ধ্যার পর এই স্টেশনে মানুষ ওখানে করে না। বর্তমানে প্রায় ১০টি ট্রেন এই স্টেশনে থামে। মাঝে মাঝে পর্যটকরাও এই ভৌতিক স্টেশন দেখতে ছুটে আসেন।