Twelve Villages of India: আপনি কি জানেন যে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের ১৪ বছর পর, ১৯৬১ সালে আবার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভাজন হয়। একটি গ্রামের বিনিময়ে ভারত একটি-দুটি নয়, এক ডজন গ্রাম পাকিস্তানকে দিয়েছিল। ভারত যে গ্রাম নিয়েছে তার নাম ‘হুসাইনিওয়ালা’। তাহলে এই গ্রামে এমন কী ছিল যে ভারত তার ১২টি গ্রাম দিতে প্রস্তুত ছিল?
ভারতের স্বাধীনতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামে ‘হুসাইনিওয়ালা’ (Hussainiwala) গ্রামের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। স্বাধীনতার বীর ভগৎ সিং, রাজগুরু এবং সুখদেবের সমাধিটি পাঞ্জাবের ফিরোজপুর জেলার হুসাইনিওয়ালা গ্রামে অবস্থিত।
২৩মার্চ, ১৯৩১ সালে, ব্রিটিশরা লাহোর জেলে ভগৎ সিং, রাজগুরু এবং সুখদেবকে ফাঁসি দেয় এবং হুসাইনিওয়ালা গ্রামের কাছে সুতলুজ নদীর তীরে তাদের মৃতদেহ দ্রুত দাহ করে। মৃতদেহগুলোও ঠিকমতো দাহ করা হয়নি। অর্ধ-দগ্ধ মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হয় সুতলুজ নদীতে।
আসলে, ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগ হলে হুসাইনিওয়ালা গ্রাম পাকিস্তানের অংশে চলে যায়। দেশভাগের বিশৃঙ্খলায় কেউ হুসাইনিওয়ালার ঐতিহাসিক গুরুত্বের দিকে নজর দেয়নি। পরে এসব শহীদের পরিবার ও বহু মানুষ এই গ্রাম ফিরিয়ে নিতে অভিযান শুরু করে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহরুর কাছে শহীদদের পরিবার চিঠি লিখে আবেগঘন আবেদন জানায়।
এর পর পণ্ডিত নেহেরু হুসাইনিওয়ালা গ্রামকে ভারতে অন্তর্ভুক্ত করতে এবং তার বিনিময়ে ফাজিলকার সীমান্ত সংলগ্ন ১২টি গ্রাম দিতে প্রস্তুত হয়। এতে পাকিস্তান রাজি হয়। ১৯৭৩ সালে, তৎকালীন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে, হুসেনিওয়ালায় তিন শহীদের স্মরণে একটি বিশাল স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হয়। প্রতি বছর ২৩ মার্চ এখানে শহীদ মেলার আয়োজন করা হয়।
১৯৭৫ সালে ভগৎ সিং-এর মা বিদ্যাবতী দেবী মারা গেলে, তার শেষকৃত্যও হুসাইনিওয়ালাতেই হয়। ১৯৬৫ সালে, বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তের শেষকৃত্যও এখানেই হয়েছিল, কারণ তাঁর শেষ ইচ্ছা ছিল যে তাঁর বিপ্লবী বন্ধু ভগৎ সিং, সুখদেব এবং রাজগুরুর সৎকার যেখানে হয়েছে সেখানেই তাঁকে দাহ করা হোক।