ঘটনাটি ১৯২০ সালের গোঁড়ার দিকের। আলওয়ারের মহারাজা জয় সিং লন্ডনে থাকাকালীন একবার বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল গাড়ি কোম্পানি রোলস রয়েসের শোরুম দেখতে পান। প্রথম থেকেই তার গাড়ির প্রতি একটা আলাদা ঝোঁক ছিল। কিন্তু ওই শো রুমে প্রবেশ করতেই তিনি অপমানিত হন। সেখানকার দাড়োয়ানেরা তাকে ভিখারি ভেবে তাড়িয়ে দেন।
আসলে রাজা জয় সিং যখন শো রুমে প্রবেশ করেছিলেন তখন তার পরনে কোনো রাজকীয় পোশাক ছিল না। পরবর্তীকালে তিনি অপমানের বদলা এমনভাবে নিয়েছিলেন শেষ পর্যন্ত ওই কোম্পানি প্রায় দেউলিয়া হতে বসেছিল এবং তাদের ক্ষমাও চাইতে হয়।
শো রুম থেকে ফিরে এসে মহারাজ জয় সিং ক্ষোভে ফেটে পড়েন, তাদের এমন দুর্ব্যবহার দেখে। সেই সময় তিনি উচিত শিক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এবার তিনি খবর পাঠান ওই শো রুমে রাজা জয় সিং আসছেন। তার আগমনের জন্য সম্মানরক্ষার্থে লাল কার্পেট বিছিয়ে দেওয়া হয়।
মহারাজ জয় সিং রোলস রয়েসের শো রুমে প্রবেশ করা মাত্রই নগদ সাতটি রোলস রয়েস গাড়ি কিনে নেন। তিনি এই শর্তে গাড়িগুলি কিনলেন যাতে ওই গাড়িগুলি ভারতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
এরপর রাজা নিজের প্রাসাদে ফিরে এলে ওই গাড়িগুলিকে আবর্জনা ফেলার ও জঞ্জাল সাফ করার কাজে ব্যবহার করার আদেশ দেন, যাতে এক মাসের মধ্যে পুরো আলওয়ার শহরটি চকচক করে।
এই খবরটি খুব দ্রুত আগুনের মতো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বের ধনী ব্যক্তিরাও এই গাড়িতে চড়া বন্ধ করে দেন এবং তারা অসন্তুষ্ট হন। এরফলে রোলস রয়েস গাড়ি বিক্রি হওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ধীরে ধীরে ওই কোম্পানি মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়।
শেষমেষ রোলস রয়েসের ব্রিটিশ নির্মাতা পুরো ঘটনাটি জানতে পেরে তিনি নিজেই মহারাজ জয় সিংকে একটি বার্তা পাঠান। অনুরোধ করেছিলেন ওই গাড়িগুলি জঞ্জাল ফেলার কাজে ব্যবহার না করার জন্য এবং তিনি ক্ষমাও চেয়ে নেন।