ক্রিকেট ছেড়ে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন এই ১০ জন খেলোয়াড়; তালিকায় ৩ বাঙালি

এদিন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলীর এক টুইটে রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। কেউ কেউ দাবি করছিলেন এবার তিনি রাজনীতির মঞ্চে পা রাখতে চলেছেন। যদিও সেই সমালোচনায় জল ঢেলেছেন বোর্ড সচিব জয় শাহ। আসলে সৌরভ গাঙ্গুলী তার ক্রিকেট জীবনের ৩০ বছর পূর্ণ করেন এবং সকলকে ধন্যবাদ জানান।

যদিও ক্রিকেট থেকে রাজনীতিতে আসা এ কোনও নতুন গল্প নয়। অতীতে অনেক খেলোয়াড় ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা নিয়ে রাজনীতির মঞ্চে গেছেন আবার কেউ কেউ ব্যর্থ হয়ে সাধারণ জীবনে ফিরে এসেছেন। এই প্রতিবেদনে তেমনি ১০ জন ভারতীয় খেলোয়াড়ের কথা বলা হয়েছে যারা ক্রিকেট ছেড়ে রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন। এবার দেখে নেওয়া যাক:

১) নভজ্যোত সিং সিধু:ক্রিকেট ক্যারিয়ারে আলোড়ন ফেলে দেওয়ার পর রাজনৈতিক জীবনকেই আপন করে নেন নভজ্যোত সিং সিধু। ১৯৮৭ বিশ্বকাপে ‘সিক্সার সিধু’ হিসেবে পরিচিত হন। ১৯৯৯ সালে ক্যারিয়ার শেষ করার পর বিজেপিতে যোগদান করেন (২০০৪-২০১৬)। এরপর জাতীয় কংগ্রেস দলে যোগদান করলেও তার মন্ত্রী পদ ত্যাগ করেছিলেন।

২) গৌতম গম্ভীর: ভারতীয় দলের অন্যতম সেরা ওপেনার গৌতম গম্ভীর দুটি বিশ্বকাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। এছাড়াও অধিনায়ক হিসেবে তিনি সফল। তার নেতৃত্বে কেকেআর দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়। ক্রিকেট ছাড়ার পর তিনি ২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগ দেন।

৩) মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন: প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের কেরিয়ার ম্যাচ ফিক্সিংয়ের কারণে শেষ হয়ে যায়। এরপর ক্রিকেট দক্ষতা ও খ্যাতির কারণে তিনি ২০০৯ সালে জাতীয় কংগ্রেস দলে যোগদান করেন। সাধারণ নির্বাচনে জয় লাভ করে সংসদ হয়েছিলেন এবং বর্তমানে তিনি তেলেঙ্গানা কংগ্রেস কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 

৪) চেতন চৌহান: ভারতীয় দলের প্রাক্তন ব্যাটসম্যান চেতন চৌহান ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর বিজেপি দলের হয়ে লোকসভার সদস্য হয়েছিলেন। ২০২০ সাল অবধি তিনি উত্তরপ্রদেশের ক্রীড়া মন্ত্রীও ছিলেন এবং ওই বছরই তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

৫) অশোক দিন্দা: আরও এক বাঙালি ক্রিকেটার অশোক দিন্দা ২০১৩ সালে শেষবার জাতীয় দলের হয়ে খেলেছিলেন। তিনি ভারতের হয়ে ১৩টি ওয়ানডে ও ৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। এছাড়া বেশ কয়েক বছর বিভিন্ন আইপিএল দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। ক্রিকেট ছাড়ার পর ২০২১ সালে তিনি বিজেপিতে যোগদান করেন। 

৬) তেজস্বী যাদব: বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবের ছেলে তেজস্বী যাদব আরজেডির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে পরিচিত। তবে তিনি একজন দুর্দান্ত ক্রিকেটারও ছিলেন। ২০০৮ সালে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের অংশ ছিলেন। তিনি ২০০৯ সালে রাজ্য স্তরে ঝাড়খন্ডের হয়েও খেলেছেন। তিনি ২০২০ সালে বিহার নির্বাচনে আরজেডির হয়ে নেতৃত্ব দেন।

৭) কীর্তি আজাদ: বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভাগবত ঝা আজাদের ছেলে কীর্তি আজাদ ১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন। তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার খুবই সংক্ষিপ্ত হয়। এরপর তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। প্রথমে বিজেপিতে যোগদান করার পর কংগ্রেস দলের সদস্য হয়েছিলেন।

৮) মনোজ তিওয়ারি: মনোজ তিওয়ারি ভারতের হয়ে ১২টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেন। এছাড়াও আইপিএলে বেশ কয়েকটি দলের সাথে যুক্ত ছিলেন। ক্রিকেট থেকে সরে আসার পর ২০২১ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছিলেন। 

৯) মোহাম্মদ কাইফ: ভারতীয় দলের দুর্দান্ত ফিল্ডার মোহাম্মদ কাইফ তার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচটি ২০০৬ সালে খেলেন। ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির ফাইনালে তার দুরন্ত ইনিংসটি আজও স্মরণীয় হয়ে আছে। ২০১৪ সালে কংগ্রেস দলে যোগদান করেছিলেন কিন্তু পরাজিত হয়ে আবার ফিল্ডিং কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেন। 

১০) লক্ষ্মীরতন শুক্লা: ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা ও ২০১৬ বিধানসভা ভোটে জিতেছিলেন। ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। ভারতের হয়ে মাত্র ৩টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। তবে দুর্বল পারফরম্যান্সের কারণে বাদ পড়েন।