মাইকেল জ্যাকসনের নাম শোনেননি এমন কোন ব্যক্তি নেই। নাচের সময় তিনি ৪৫° কোনে তার শরীরকে হেলিয়ে দিতেন, এই দৃশ্য সকলের কাছে চিরপরিচিত। কিন্তু বর্তমান সময়ে এমনটা করা কঠিন নয়, প্রযুক্তি বা দড়ির সাহায্যে অনায়াসে করা যায়, কিন্তু তিনি বাস্তবতা করে দেখাতেন।
মাইকেল জ্যাকসন কোন প্রযুক্তির সাহায্যে ছাড়াই যা করতেন একে বলা হয় অ্যান্টি-গ্রাভিটি ডান্স। বহু নিত্যশিল্পী তারই মত নাচার চেষ্টা করেন বা আমরাও কখনো কখনো বাড়িতে ৪৫° ডিগ্রি কোণে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু তা কখনোই হয়নি।
বিজ্ঞানসম্মত ভাবে, আমরা যখনই শরীরকে ৪৫° ডিগ্রি কোণে হেলিয়ে দেব, তখনই শরীরের ভরকেন্দ্রের পরিবর্তন হবে, যার ফলে ভারসাম্য নষ্ট হয়ে মাটিতে পড়ে যাব। কিন্তু উনি কিভাবে এমনটা বাস্তবে করতেন? একজন সাধারন মানুষের পক্ষে তা অসম্ভব।
এর পিছনে লুকিয়ে ছিল একটি অনন্য রহস্য। সেই আসল রহস্যটা ছিল তার পোশাক। তার এই বিশেষ পোশাকটি বানিয়ে ছিলেন বিখ্যাত ডিজাইনার ডেনিস টমকিন্সের।
মাইকেল জ্যাকসনের ইচ্ছা ছিল যে কোনো রকম দড়ি বা প্রযুক্তি ব্যবহার না করেই নাচের সময় অনেকটা সামনের দিকে ঝুঁকবেন। তার এমন ইচ্ছার কথা ওই বিখ্যাত পোশাক ডিজাইনারকে জানিয়ে ছিলেন।
১৯৯২ সালে একটি রিয়েলিটি শো’র অনুষ্ঠানে এমন বিস্ময়কর স্টান্ট করেছিলেন যা দেখে সকল দর্শকগণ অবাক হয়ে যান। তার পোশাক ছাড়াও জুতোর মধ্যেই লুকিয়ে ছিল আসল ম্যাজিক, যা সারা বিশ্বে ‘ম্যাজিক সু’ নামে পরিচিত সেটি।
মাইকেল জ্যাকসনের পোশাক ডিজাইনার বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে ম্যাজিক জুতোটি তৈরি করেছিলেন। নাচার সময় নিজের মধ্যে জুতোটি মেঝেটিকে আঁকড়ে ধরে থাকত, এর ফলে সামনের দিকে কখনোই পড়ে যাওয়ার ভয় থাকতো না। তার এই ধরনের স্টান্ট সারাবিশ্বে জনপ্রিয়তা ছেয়ে যায়।
এই কিংবদন্তি ড্যান্সারের মৃত্যুর পর তার ম্যাজিক সু বেশ চড়া দামে নিলামে উঠেছিল। অবশেষে ৪.২৫ কোটি টাকায় তা বিক্রি হয়। বর্তমানে মাইকেল জ্যাকসনের জুতো জোড়া দুটি রাশিয়ার হার্ড রক ক্যাফেতে সংরক্ষিত আছে।