ব্যবসার জায়গায় বা বাড়ির সামনে অনেকেই লেবু লঙ্কা ঝুলিয়ে রাখেন কেন

ব্যবসার ক্ষেত্রে হোক বা বাড়ির সদর দরজায় লেবু লঙ্কা ঝুলিয়ে রাখা একটি বহু প্রাচীন প্রথা। কেউ কেউ অন্ধবিশ্বাস বলে মনে করেন আবার কেউ বিশ্বাসের সাথে পালন করেন। তবে যারা জ্যোতিষ শাস্ত্রের উপর ভরসা রাখেন তারা এই প্রথাটিকে অবশ্যই মানেন। তবে লেবু লঙ্কা ঝোলানোর একটি নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে এবং সেই নিয়ম অনুযায়ী কাজ করলে খুব দ্রুত ফল পাওয়া যায়।

আমরা কমবেশি সকলেই জানি লেবু লঙ্কা ঝুলিয়ে রাখা হয় যাতে ব্যবসার জায়গায় কিংবা বাড়ির মধ্যে কোন নেগেটিভ এনার্জি প্রবেশ করতে না পারে বা কারো নজর না লাগে। কুনজর থেকে বাঁচতে এবং অশুভ শক্তিকে শুভ শক্তিতে পরিণত করতে অনেকেই লেবু লঙ্কা ঝুলিয়ে রাখেন। তবে এর পিছনে কিছু ভারতীয় পৌরাণিক ও বিজ্ঞানিক তথ্য উঠে আসে।

Significance of hanged Lemon and Green Chilly dgtl - Anandabazar

আগেকার দিনে অধিকাংশ বাড়ি ফাঁকা ছিল না সেই সময় বিভিন্ন পোকামাকড় দূর করতে লেবু লঙ্কার ব্যবহার হত। বহু প্রাচীনকাল থেকেই ভারতীয়রা বিভিন্ন কাজে লেবু লঙ্কার ব্যবহার করে আসছে। প্রাচীনকালে রাস্তাঘাট পাকা ছিল না, এমনকি কোনো যানবাহনও ছিল না তাই মানুষকে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে দীর্ঘ পথ ভ্রমণ করতে হতো তখন তারা লেবু লঙ্কা সাথে করে নিয়ে বের হতেন। ক্লান্ত হয়ে পড়লে তখন লেবুর রস জলের মধ্যে মিশিয়ে পান করতেন। যাতে বাকি পথটুকু চলার এনার্জি পান।

এছাড়াও বলা হয়েছে লঙ্কা রাখতেন সাপের ভয়ে। কারণ আগেকার দিনে সাপে কামড়ে মানুষের মৃত্যু খুবই সাধারণ ঘটনা ছিল। তাই রাস্তায় কোন বিষাক্ত সাপের কামড়ালে তা বোঝার জন্য লঙ্কার ব্যবহার হতো। সাপে কামড়ানোর পর লঙ্কা চিবানোর পর যদি ঝাল লাগত তাহলে বুঝতে হত সাপটি বিষাক্ত নয়, আর লঙ্কা খেয়েও যদি কোন কিছুই অনুভব হতো না তাহলে বিষাক্ত সাপে কামড়েছে বলে জানা যেত। সেই থেকে লেবু লঙ্কাকে দুর্ভাগ্য ও সৌভাগ্যের সাথে ব্যবহার করার রেওয়াজ চলে আসছে।

এছাড়া ভারতীয় পুরাণ অনুসারে বলা হয়েছে, সমৃদ্ধির দেবী লক্ষ্মীর আরেকটি বোন ছিল অলক্ষ্মী। এই অলক্ষ্মী ছিলেন মানুষের যাবতীয় দুর্ভাগ্য ও দারিদ্র্যের কারণ। তাই দেবী লক্ষ্মীকে স্বাগত জানানোর জন্য মিষ্টি ও ফল প্রসাদ দেওয়া হয় যাতে তিনি সুখ-সমৃদ্ধির জন্য আশীর্বাদ করেন। অন্যদিকে অলক্ষ্মীকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্যই নাকি দোকানের বাইরে বা সদর দরজায় লেবু লঙ্কা ঝুলিয়ে রাখার প্রথা চলে আসছে ভারতীয় পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী।