সুপার সাইক্লোন আম্ফানের বর্ষপূর্তিতে বাংলায় হানা দিতে চলছে আর এক ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। এই ইয়ায় সিভিয়ার সাইক্লোনের রূপ নিতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। গত বছর মে মাসে ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়েছিল সুপার সাইক্লোন আম্ফান। তবে আম্ফানের’-এর থেকেও কি ভয়ঙ্কর হতে চলেছে ‘ইয়াস’? আপাতত সেই উত্তরের সন্ধানে আছেন বঙ্গবাসীরা।
এবার জেনে নেওয়া যাক, বারবার এই বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগরের বুকেই কেন জন্ম নেয়? পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বিধ্বংসী দশটি ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে আটটি সৃষ্টি হয়েছে বঙ্গোপসাগরেই। আর ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, এখনো অব্দি ৩৬টি ভয়াবহ ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে ২৬টি ঘূর্ণিঝড়ের জন্ম হয়েছে এই সমুদ্রমন্থনে।
বিশ্বের ভয়ঙ্কর ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়গুলির মধ্যে যেমন ভোলা, সুপার সাইক্লোন, আমফান সহ অসংখ্য ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে এই বঙ্গোসাগরে। যার প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশ। গত দুই শতকে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত কুড়ি লক্ষ মানুষ। ক্ষয়ক্ষতির দিক দিয়ে পিছিয়ে নেই ভারতবর্ষও, উত্তর ভাগ বাদ দিলে বাকি তিন দিকেই সহ্য করতে হয়েছে সামুদ্রিক ঝড়ের তান্ডব।
তবে ভারত মহাসাগর এবং আরব সাগরে যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি হয়ে ভারতের স্থলভাগে আছড়ে পড়ে তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে। আর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলির মধ্যে হল পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অন্ধপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ু।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বঙ্গোপসাগরের আকৃতি ত্রিভুজাকৃতি এবং তলদেশ অগভীর হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার সবচেয়ে সহায়ক স্থান। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার জন্য যে আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা থাকা দরকার তা বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
এছাড়া সারাবছর ধরে এখানকার জলের তাপমাত্রা থাকে ২৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সেইসাথে ক্রমাগত বৃষ্টি হওয়ার জন্য আর্দ্রতাকে ধরে রাখে। যার ফলে প্রায়ই নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় বা মহাঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে বেশি সময় লাগে না।