ভোরবেলাতেই কেন অপরাধীদের ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়
ভারতীয় দণ্ডবিধির সর্বোচ্চ শাস্তি হলো ফাঁসি। যেকোনো ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়। তবে সূর্যোদয়ের আগে বা ভোর বেলায় কেন ফাঁসি দেওয়া হয়? দিনের অন্য সময় নয় কেন। এর পিছনে রয়েছে বেশ কয়েকটি কারণ।
আজ ২০শে মার্চ, নির্ভয়া কাণ্ডের ৪ হত্যাকারীদের আজ ভোর বেলাতেই ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। ২০১২ সালে ১৬ ডিসেম্বর রাতে দিল্লির একটি চলন্ত বাসে প্যারামেডিকেল ছাত্রী নির্ভয়াকে ওই অপরাধীরা ধর্ষণ করে এবং তার মৃত্যু হয়। প্রায় সাত বছর পর, ফাঁসির কাঠে ঝোলানো হল তার অপরাধীদের।
তবে এই প্রথম ভারতবর্ষের ইতিহাসে একসাথে চারজনকে ফাঁসি দেওয়া হল। কিন্তু সকলের ক্ষেত্রে একই সময় বেছে নেওয়া হয়েছে ফাঁসির জন্য। কিন্তু কেন? সূর্যোদয়ের আগে অপরাধীদের ফাঁসিকাঠে চড়ানো হয় এর পেছনে রয়েছে মূলত চারটি কারণ।
∆ প্রথম কারণ: আইন অনুসারে ফাঁসি দেওয়া হলে ওই কর্তৃপক্ষকে অনেকগুলি নিয়ম মেনে চলতে হয়। নানান নথিপত্র জমা করা এবং একাধিক বিষয়ের উপর লেখালেখির কাজ বাকি থাকে। সূর্যোদয়ের আগে পুরো ব্যাপারটা মিটে গেলে ওই জেলের দৈনন্দিন কাজকর্মে কোন ব্যাঘাত ঘটে না। স্বাভাবিকভাবে সকাল থেকেই কাজ-কর্ম শুরু করা যায়।
∆ দ্বিতীয় কারণ: অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে ফাঁসির বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় নাগরিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। এছাড়া প্রবলভাবে শুরু হয় উত্তেজনা এবং আন্দোলন। তাই এই বিষয়গুলি এড়ানোর জন্য জেলের তরফ থেকে ভোরবেলাকেই বেছে নেয়া হয়। যখন অধিকাংশ মানুষ ঘুমের মধ্যে আচ্ছন্ন থাকেন।
∆ তৃতীয় কারণ: যেকোনো মৃত্যুই দুঃখের। ফাঁসি দেওয়ার সময় সবসময় চেষ্টা করা হয় যাতে অপরাধী কোনরকম মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ে বা কোন তাকে যন্ত্রণা ভোগ করতে না হয়। দিনের আলোয় ফাঁসি কার্যকর করতে গেলে আসামিকে প্রবলভাবে মানসিক চাপ ভোগ করতে হবে সেই কারণেই ভোরবেলাকেই বেছে নেওয়া হয়।
∆ চতুর্থ কারণ: ফাঁসি হয়ে যাওয়ার পর কয়েক ঘন্টা পর মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়। ফাঁসি সূর্যোদয়ের আগে হলে দেহটা পরিবারের হাতে সকাল সকালই তুলে দেয়া যায়। ফলে পরিবারের তরফেও অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়াকর্ম এর জন্য অনেকটা সময় থাকে।