প্রতিটি ক্রিকেটারের স্বপ্ন থাকে তার দলের হয়ে বিশ্বকাপ খেলে দেশকে চ্যাম্পিয়ন করা। তবে কিছু বিখ্যাত ক্রিকেটারের এই ‘স্বপ্ন’ কেবল স্বপ্নই থেকে গেছে। ১৯৭৫ সালে প্রথমবার আইসিসি বিশ্বকাপ হয় এবং এখনো পর্যন্ত মোট ১২ বার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজকের আলোচ্য বিষয়ে রয়েছে, বিশ্বকাপারে ফাইনাল ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে যারা দলকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন, এবার তাদের সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:-
১৯৭৫ বিশ্বকাপ: ক্লাইভ লয়েড
আইসিসির প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়া দল। যেখানে অস্ট্রেলিয়া ১৭ রানে পরাজিত হয়। এই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড ৮৫ বলে ১০২ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন ও বল হাতেও একটি উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন।
১৯৭৯ বিশ্বকাপ: ভিভ রিচার্ডস
১৯৭৫ বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড দল। এই ম্যাচের সেরা হন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান ভিভ রিচার্ডস, যিনি ১৩৮ রানের একটি অপরাজিত ইনিংস খেলেন। যার ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর বোর্ড গিয়ে দাঁড়ায় ২৮৬ রান। এই রান তাড়া করতে গিয়ে ইংল্যান্ড ৯২ রানে পরাজিত হয়।
১৯৮৩ বিশ্বকাপ: মোহিন্দর অমরনাথ
১৯৮৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতীয় দল। এই ম্যাচে মোহিন্দর অমরনাথ ব্যাট হাতে ২৬ রান ও বল হাতে ১২ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নিয়ে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে ম্যাচের সেরা হন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ১৮৩ রান তাড়া করতে নেমে ১৪০ রানে গুটিয়ে যায়।
১৯৮৭ বিশ্বকাপ: ডেভিড বুন
কলকাতার ইডেন গার্ডেনে ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড দল। যেখানে ইংল্যান্ড মাত্র ৭ রানে পরাজিত হয়। এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ডেভিড বুন ৭৫ রানের একটি ঝকঝকে ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন।
১৯৯২ বিশ্বকাপ: ওয়াসিম আক্রম
এই বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড দল। যেখানে ইংল্যান্ড ২২ রানে পরাজিত হয়। এই ম্যাচে ওয়াসিম আক্রম প্রথমে ব্যাট হাতে ১৮ বলে ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন এবং বল হাতে ৩টি উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন।
১৯৯৬ বিশ্বকাপ: অরবিন্দ ডি সিলভা
এই বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কা দল। যেখানে অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেটে পরাজিত হয়। এই ম্যাচে অরবিন্দ ডি সিলভা প্রথমে বল হাতে ৩টি উইকেট নেন এবং পরে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি (১০৭* রান) হাঁকিয়ে দলকে জেতান ও ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন।
১৯৯৯ বিশ্বকাপ: শেন ওয়ার্ন
এই বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া দল। যেখানে পাকিস্তান ৮ উইকেটে পরাজিত হয়। এই ম্যাচে শেন ওয়ার্ন ৯ ওভারে মাত্র ৩৩ রান দিয়ে ৪টি উইকেট তুলে নেন এবং ম্যাচের সেরা হন।
২০০৩ বিশ্বকাপ: রিকি পন্টিং
জোহানেসবার্গে এই বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও অস্ট্রেলিয়া দল। যেখানে ভারত ১২৫ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়। এই ম্যাচে অজি অধিনায়ক রিকি পন্টিং ১৪০ রানের দুর্দান্ত অপরাজিত ইনিংস খেলেন এবং ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন।
২০০৭ বিশ্বকাপ: অ্যাডাম গিলক্রিস্ট
এই বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল শ্রীলংকা অস্ট্রেলিয়া দল। যেখানে শ্রীলঙ্কা ৫৩ রানে (ডাকওয়ার্থ-লুইস) পরাজিত হয়। অস্ট্রেলিয়ার বিধ্বংসী ওপেনার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ১০৪ বলে ১৪৯ রানের ইনিংস খেলে দলকে ২৮১ রানে পৌঁছে দেন এবং ২টি ক্যাচ ও ১টি স্ট্যাম্প করে ম্যাচের সেরা হন।
২০১১ বিশ্বকাপ: মহেন্দ্র সিং ধোনি
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল শ্রীলংকা ও ভারতীয় দল। যেখানে শ্রীলংকা ৬ উইকেটে পরাজিত হয়। ২৭৫ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নামলে শেষ পর্যন্ত মহেন্দ্র সিং ধোনি ৯১ রানে অপরাজিত থেকে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে চ্যাম্পিয়ন করেন ও ম্যাচের সেরা হন।
২০১৫ বিশ্বকাপ: জেমস ফকনার
এই বিশ্বকাপের ফাইনালের মুখোমুখি হয়েছিল নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া দল। যেখানে নিউজিল্যান্ড ৭ উইকেটে পরাজিত হয়। এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট বোলার জেমস ফকনার ৯ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে ৫টি উইকেট নিয়েছিলেন এবং ম্যাচসেরা হন।
২০১৯ বিশ্বকাপ: বেন স্টোকস
সর্বশেষ বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড দল। যেখানে নাটকীয়ভাবে জয়ী হয় ইংল্যান্ড। ২৪১ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নামলে ড্র হয় এবং ‘ম্যাচের সেরা’ বেন স্টোকস ৮৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। এরপরে সুপার ওভারেও ড্র হলে বাউন্ডারির নিরিখে ইংল্যান্ড দল চ্যাম্পিয়ন হয়।