রাজা দশরথের মৃত্যু হলে তার দুই পুত্র রাম ও লক্ষণ পিন্ডদানের জন্য সমস্ত সরঞ্জাম যোগাড় করতে গিয়েছিলেন।তাদের ফিরতে দেরি হয় আর এদিকে পিন্ডদানের সময় বয়ে যাচ্ছিল বলে সীতা চিন্তিত হয়ে পড়েন। তাই সময় বিলম্ব না করে সমস্ত বিধি-বিধান মেনে তার স্বর্গীয় শ্বশুর দশরথের পিন্ডদান করেছিলেন।
হিন্দু শাস্ত্রে মহিলাদের পিন্ডদান করা নিষিদ্ধ বলে সীতা চারজনকে সাক্ষী রাখেন। যথাক্রমে তারা হলেন একজন পুরোহিত, গরু, কাক ও একটি নদী। অতঃপর রাম লক্ষণ ফিরে এলে সীতা তাদের বলেন যে সমস্ত নিয়ম মেনেই তার পিতার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এটা শুনে রাম বিস্মিত হন। তখন সীতা ওই চারজনের কথা বলেন যারা পিন্ডদানের সময় সাক্ষী ছিলেন।
দশরথপুত্র রাম যখন তাদের জিজ্ঞাসা করেন যে কাজটি সুসম্পন্ন হয়েছে কিনা তখন ওই চারজনই অস্বীকার করেছিল। এতে সীতা প্রচন্ড রেগে যান এবং তাদের এমন কিছু অভিশাপ দেন যা তাদের চিরকাল বয়ে বেড়াতে হয়। তিনি পুরোহিতকে অভিশাপ দিয়ে বলেছিলেন যে, পূজা অর্চনা করার পরেও তাদের কখনো দারিদ্র ঘুচবে না। এমন কি কোনো আশাও পূরণ হবে না।
এরপর নদী (ফাল্গু)-কে অভিশাপ দিয়ে বলেন, এই নদী সারাবছর শুকনো থাকবে, এমনকি বর্ষাকালেও খরা দেখা দেবে। কখনোই এই নদীর জল প্রবাহিত হবে না। এরপর কাককে অভিশাপ দিয়ে বলেন তোমরা কখনোই পেটপুরে খেতে পারবে না যা কিছু হবে তা মারামারি করেই খেতে হবে কখনো কখনো মৃত্যু ঘটবে।
এরপর গরুকে অভিশাপ দিয়ে বলেন, প্রতিটি বাড়িতে তোমার পূজা হলেও সেই বাড়ির এঁটো খাবার তোমাকে খেতে হবে। তবে পিন্ডদনের সময় একমাত্র সাক্ষী দিয়েছিল একটি গাছ, যাকে সীতা প্রাণভরে আশীর্বাদ করে বলেন যখনি কেউ এখানে পিন্ডদান করতে আসবে তারাও তোমাকে সুতো বেঁধে পূজা করে যাবে।