Mysterious: ছবি তুলতে গেলেই ক্যামেরা বন্ধ হয়ে যায়! এটাই নাকি বিশ্বের সবচেয়ে ‘ভুতুড়ে পুতুল’

রুপোলি পর্দায় পুতুলদের নিয়ে অনেক ভৌতিক মুভি নির্মিত হয়েছে। তবে এই ধরনের ঘটনা বাস্তবেও ঘটেছে। এমনই ভুতুড়ে পুতুল নিয়ে আমেরিকার এক গোটা পরিবার ভয়ে শিউরে উঠেছিল, তার নাম রবার্ট। বলা হয় এটাই নাকি বিশ্বের সবচেয়ে ভুতুড়ে পুতুল। ঘটনাটি ১৯০০ সালের। আমেরিকার ওই পরিবারের সবচেয়ে ছোট ছিল জিন।

বড় পর্দায় এই পুতুলদের নিয়ে ভয়াবহ কাহিনি কম হয়নি। বলিউডের ‘কাতিয়া বিচ্ছু’ থেকে হলিউডের ‘অ্যানাবেল’, ‘চাকি’ প্রভৃতি পুতুলের কাহিনি দর্শককে রীতিমতো ভয় ধরায়। এই ধরনের গল্প শুধু সিনেমার গল্পেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। বাস্তবেও এমন ঘটনা ঘটেছে আমেরিকায়।

তাদের বাড়ির এক চাকর জিনকে একটি পুতুল উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। পুতুলটি তার সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিল। এরপর ১০ বছর বয়সী জিন হঠাৎ মাঝ রাতে ঘুম থেকে উঠে দেখতে পায় যে, পুতুলটি তার বিছানায় উপর বসে তার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। ভয়ে চিৎকার করে ওঠে জিন এবং তার ঘরের আসবাবপত্র গুলি নিজে থেকেই এদিক ওদিক সরে যেতে থাকে, এমনকি দরজাটিও বন্ধ হয়ে যায়। ছেলের চিৎকার শুনে ছুটে যান তার মা।

যে পুতুলটিকে ঘিরে আমেরিকার এক পরিবার ভয়ে শিউরে উঠেছিল, তার নাম রবার্ট। কথিত আছে, বিশ্বের সবথেকে ‘ভূতুড়ে’ পুতুল এই রবার্ট।

জিন সমস্ত ঘটনাটি বললেও কেউ বিশ্বাস করেনি। কিন্তু এরপর সময় যত এগোতে থাকে বাড়ির অন্যান্যরাও বাড়ির মধ্যে কিছু একটা উপস্থিতির টের পেতে থাকেন। এরপর মনের ভুল ভেবে সবকিছু এড়িয়ে যেতে থাকে সেই পরিবারের সদস্যরা। জিন পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করে বিয়েও করে নতুন সংসার পাতেন।

বাবা মা মারা যাওয়ার পর পৈতৃক ভিটেই ফিরে আসেন জিন। এরপর তিনি স্ত্রীকে বলেন, ওই পুতুলটিকে রাখার জন্য আলাদা ঘর করতে চান। তার স্ত্রী রাজি না হয়ে, ছাদের মধ্যে আটকে রাখেন পুতুলটিকে। এরপর ওই পরিবারে যখনই কেউ বেড়াতে আসেন তারা ছাদের ঘর থেকে চলাফেরা ও অট্টহাসি শুনতে পেতেন। তবুও তারা বাড়ি ছেড়ে যাননি।

১৯০০ সালের ঘটনা। আমেরিকার ইটন স্ট্রিট এলাকায় থাকত ওটো পরিবার। ওটো পরিবারের সবচেয়ে খুদে সদস্য ছিল ইউজিন রবার্ট ওটো। ইউজিনকে ভালবেসে সকলে জিন বলে ডাকতেন। তাঁদের বাড়ির এক চাকর ইউজিনকে নিজের হাতে তৈরি করা একটি পুতুল উপহার দেন।

১৯৭৪ সালে জিন মারা যান। সেই ভুতুড়ে বাড়িতে আসেন নতুন মালিক। সঙ্গে ছিল তার ১০ বছর বয়সী মেয়ে। ছাদের ঘর থেকে মেয়েটি ওই পুতুল দিকে খুঁজে পায় এবং তার সঙ্গে নিয়মিত খেলা করতে থাকে। কিন্তু মেয়েটিকেও পুতুলটি বারবার আক্রমণের চেষ্টা করেছিল। মেয়েটি পুতুলটিকে সারা বাড়ি ঘুরে বেড়াতে দেখতে পেত। ভয় পেয়ে পুতুলটিকে একটি মিউজিয়ামে পাঠিয়ে দেন তার বাবা মা।

এরপর মিউজিয়ামে থাকা ভয়ানক পুতুল দিকে দেখতে মানুষের ভিড় জমান। একটি কাঁচের পাত্রের ভিতরে পুতুলটিকে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তবুও তার ভুতুড়ে কাণ্ডকারখানা বন্ধ হয়নি। দর্শকদের মধ্যে অনেকেই দাবি করেছেন যখনই তারা পুতুল দিয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করেছেন ক্যামেরা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ মিউজিয়াম থেকে বের হবার পরেই ক্যামেরাগুলি নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যেত। 

সেই পুতুলের আকার জিনকেও ছাড়িয়ে যায়। পুতুলটি জিনের এতই পছন্দ হয়েছিল যে, সে নিজের নামেই পুতুলের নাম রেখেছিল। জিন সেই পুতুলের নাম দিয়েছিল রবার্ট। জিনের সর্ব ক্ষণের সঙ্গী ছিল সে। পুতুলটির চেহারা একনজরে দেখে অদ্ভুত লাগলেও তার প্রতি জিনের ভালবাসা দেখে বাড়ির কেউ এই বিষয়ে কিছু বলেননি।

মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের দাবি, কখনো কখনো ওই পুতুলটিকে কাঁচের দেওয়ালে হাত বুলাতে দেখা যেত আবার আবার কখনো ভয়াল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতো। অনেকেই মনে করেন, যে চাকরটি জিনকে পুতুলটি দিয়েছিলেন তিনি নাকি কোনও কালো জাদু প্রয়োগ করেছিলেন পুতুলটির ওপর। কোনও কারণে মালিকের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন এই উপায়ে।